কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার চেয়ারপার্সন-পদে জবা মাছোয়ারের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি শুক্রবার খারিজ করে পুরপ্রধান নির্বাচনের দিনক্ষণ এবং সেই নির্বাচনী বৈঠকের রিপোর্ট পেশের সময় বেঁধে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিংহের নির্দেশ, ১৬ জানুয়ারি, সোমবার ওই পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনের বৈঠক করতে হবে। এবং সেই বৈঠক হবে পুরুলিয়ার জেলাশাসকের তত্ত্বাবধানে। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করার পাশাপাশি সেই রেকর্ডিং সংরক্ষণ করতে হবে।
একই সঙ্গে বিচারপতির নির্দেশ, এই ব্যাপারে পরের দিনেই অর্থাৎ ১৭ জানুয়ারি কোর্টে রিপোর্ট জমা দিতে হবে জেলাশাসককে। এ দিনের রায়ে বিচারপতি সিংহ বলেছেন, হাই কোর্ট আশা করে, জেলাশাসক নিজের পদের মর্যাদা বজায় রাখবেন।
ঝালদার পুর চেয়ারম্যানের পদকে ঘিরে জটিলতা তৈরি হওয়ায় ডিসেম্বরে পুরুলিয়া জেলাশাসককে ওই পুরসভার দৈনন্দিন কাজ সামলানোর দায়িত্ব দিয়েছিল হাই কোর্ট। কংগ্রেসের আইনজীবী কৌস্তভ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘আদালতে গণতন্ত্রেরই জয় হল।’’ গত পুর নির্বাচনে ঝালদায় তৃণমূল কংগ্রেস এবং কংগ্রেস পাঁচটি করে আসন পেয়েছিল। দু’টি আসনে জেতেন নির্দল প্রার্থীরা। নির্দলদের সমর্থনে বোর্ড গড়ে তৃণমূল। পরে নির্দল পুরপ্রতিনিধিরা কংগ্রেস শিবিরে যোগ দেওয়ায় তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত পুর বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে কংগ্রেস। এই জটিলতার মধ্যেই কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুন হন। তপনের জায়গায় নির্বাচনে জেতেন তাঁরই ভাইপো মিঠুন কান্দু।
এ দিকে, আস্থাভোটে কংগ্রেস জিতলেও চেয়ারম্যান নির্বাচনে নানা ভাবে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। চেয়ারম্যানের পদপ্রার্থী নির্দল কাউন্সিলর শীলা চট্টোপাধ্যায়ের কাউন্সিলর-পদ বাতিলের উদ্দেশ্যে শো-কজ় করেন ঝালদার এসডিও। পুরপ্রধান নির্বাচন নিয়ে শেষ পর্যন্ত হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস। তাদের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী, প্রীতি কর ও দেবায়ন ঘোষ কোর্টে অভিযোগ করেন, রাজ্য প্রশাসন এবং তৃণমূল বেআইনি ভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইছে। পাল্টা যুক্তি দেখায় রাজ্য সরকারও। সেই সময়েই রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুরপ্রধান-পদে তৃণমূল কাউন্সিলর জবা মাছোয়ারকে নিয়োগ করেছিল।