আনিস খান। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পরিবারের আর্জি সত্ত্বেও হাওড়ার ছাত্রনেতা আনিস খান মৃত্যু মামলায় বিচার বন্ধ হবে না বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ট্রায়াল অর্থাৎ তদন্তের ভিত্তিতে যে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা বন্ধ করা হবে না।
হাই কোর্ট জানিয়েছে, এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হবে আগামী ৯ জানুয়ারি। তবে আনিসের পরিবার সিবিআই তদন্তের যে দাবি জানিয়েছিল, তা পরবর্তী শুনানির দিন শুনবে উচ্চ আদালত।
এর আগে আনিস খানের রহস্যমৃত্যুর নিয়ে সিবিআই তদন্তের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এ বিষয়ে আনিসের পরিবারের তরফে করা পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেন। বিচারপতি মান্থা বলেন, ‘‘তখন আমি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিইনি। আমার ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আপনারা ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছেন। এখন আবার আমার কাছেই কেন এই আর্জি। মামলাটি ডিভিশন বেঞ্চে রয়েছে তাই সেখানেই ওই আর্জি জানান। এখন আমি এই মামলাটি শুনতে পারি না।’’
আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী তখন আর্জি জানান, আগামী ১২ ডিসেম্বর থেকে রাজ্য পুলিশের সিআইডির পেশ করা চার্জশিটের ভিত্তিতে আনিসের মৃত্যু মামলার বিচারপর্ব (ট্রায়াল) শুরু হবে। সেই ট্রায়ালের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। কিন্তু বিচারপতি মান্থা জানান, সেটাও তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। দ্রুত ট্রায়াল বন্ধের আর্জি নিয়ে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় আনিসের পরিবার।
প্রসঙ্গত, এর আগে হাওড়ার আমতার বাসিন্দা আনিসের মৃত্যুর নিয়ে বিচারপতি মান্থা রাজ্য পুলিশের সিটকে ওই তদন্ত করতে বলেছিলেন। কিন্তু পুলিশের তদন্তে অখুশি মৃতের পরিবার। চার্জশিটের একাধিক বিষয় নিয়ে তারা আপত্তি জানিয়েছিল। সেই তদন্ত এবং ট্রায়াল বন্ধ রাখার জন্য আবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল মৃত আনিসের পরিবার।
২০২২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আমতার সারদা গ্রামে নিজের বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় ছাত্রনেতা আনিসের। আনিসের মৃত্যু স্বাভাবিক না কি খুন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। অভিযোগের আঙুল উঠেছিল পুলিশের দিকেও। অভিযোগ, পুলিশের লোকই আনিসকে ধাক্কা মেরে ছাদ থেকে ফেলে দেন। রাজ্য সরকারের তরফে সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করা হলেও সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিল পরিবার। আদালতে তা নিয়ে মামলা হলেও দাবি মেটেনি।