প্রতীকী ছবি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বাবা-মা মুসলমান। থাকেন বাংলাদেশে। আর তিনি থাকেন ভারতে। এক দশক আগে বিয়ের জন্য ধর্ম পরিবর্তন করেছিলেন। পরিবর্তিত হয়েছিল নামও। এখন নাগরিকত্বের প্রশ্নে সেটাই কাঁটা হয়ে দাঁড়াল মুম্বইয়ের বাসিন্দা তুষার সুভাষ রায়ের। পরিচয়পত্রে গরমিল থাকায় জেলেও যেতে হয়েছে। এখন সেই পরিচয়পত্র ফিরে পেতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েও বিমুখ হলেন তুষার। মঙ্গলবার উচ্চ আদালত জানায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই ওই বিষয়টি বিবেচনা করবেন। তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করবে না আদালত।
তুষারের পূর্ব নাম জিয়া শরিফ হোসেন। ২০০৮ সালে বিয়ে করেন মুম্বইয়ের এক তরুণীকে। জানা গিয়েছে, বিয়ের জন্যই মুসলিম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু হন তিনি। কিন্তু ১৮ বছর ধরে পাসপোর্টে তাঁর আগের নামই রয়েছে। ২০০৬ সালের পর ২০১৬ সালে পাসপোর্ট পুনর্নবীকরণের (রিনিউ) সময়েও তিনি নতুন নাম ব্যবহার করেননি। আবার আধার কার্ডেও রয়েছে সেই পুরনো নাম। সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী অমাজিত দে হাই কোর্টকে জানান, ওই ব্যক্তি কোন দেশের বাসিন্দা তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। প্রায়ই তিনি বাংলাদেশে যান। বছর দুয়েক আগে পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে এ রাজ্যে ঢোকার সময় পরিচয়পত্রে গরমিল লক্ষ করা যায়। তার পরেই তুষারের পাসপোর্ট এবং আধার কার্ড বাজেয়াপ্ত করে বিএসএফ। নিম্ন আদালতের নির্দেশে এখন সেগুলি যাচাইয়ের কাজ চলছে।
হাই কোর্টে তুষারের দাবি, তাঁর জন্ম এ দেশেই হয়েছে। বাবা-মা বাংলাদেশে থাকলেও তিনি ভারতীয়। কলকাতা পুরসভা তাঁকে জন্মের সার্টিফিকেট দিয়েছে। এ দেশের নাগরিক হিসাবে তাঁর পাসপোর্ট ও আধার কার্ড ফিরিয়ে দেওয়া হোক। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা অবশ্য ওই আবেদনে সাড়া দেননি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘মামলাকারী কোন দেশের নাগরিক তা জানা দরকার। পুরো বিষয়টি নিয়েই ধোঁয়াশা রয়েছে। এখন পরিচয়পত্র যাচাইয়ের কাজ পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষই করুন। ফলে আদালত এতে নাক গলাবে না।’’
এর পরই মামলাটি খারিজ করে দেয় আদালত।