কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অপসারণ মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার এই মামলায় বিচারপতি কৌশিক চন্দের পর্যবেক্ষণ, আইন অনুযায়ী আচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। তবে এই মামলায় কী কারণে উপাচার্যকে অপসারণ করা হয়েছে, রাজভবনের কাছে তা জানতে চায় আদালত। সেই কারণেই আচার্য তথা রাজ্যপালকে এই মামলায় যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশ, আগামী দু’দিনের মধ্যে আচার্যকে মামলায় যুক্ত করতে হবে। আগামী ১৭ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সুহৃতা পালকে অপসারণ করা হয়। আচার্যের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা করেন উপাচার্য। সোমবার তাঁর আইনজীবী কিশোর দত্তের বক্তব্য, গত ২৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার উপাচার্যের কাছে কিছু তথ্য চান। এর পরে স্পষ্ট কোনও কারণ ছাড়াই গত ৬ অগস্ট শো-কজ করা হয় উপাচার্যকে। শো-কজের জবাবে আচার্য সন্তুষ্ট না হওয়ায় অপসারিত হন উপাচার্য। নিয়ম মেনে সুহৃতা পালকে উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। তার পরেই উপাচার্যকে সরানোর নির্দেশ দেন রাজ্যপাল।
এমনিতেই অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের সঙ্গে রাজ্যপালের ‘তিক্ততা’ চলছে। রাজ্যের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন আচার্য বোস। সরকার পোষিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আচার্যের নিয়োগ করা উপাচার্যদের স্বীকৃতি দেবে না রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর, এমনটাই জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এই ঘটনার পর রাজ্যের ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন রাজ্যপাল। এর বিরোধিতা করে ব্রাত্য বলেছিলেন, ‘‘এই ঘটনা উচ্চশিক্ষায় হস্তক্ষেপ। রাজভবন থেকে আমাদের রাজ্যের উচ্চশিক্ষায় নজিরবিহীন হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ অন্য দিকে, সম্প্রতি রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ম্যাকাউট) অস্থায়ী উপাচার্য গৌতম মজুমদার পদত্যাগ করেছেন। গৌতমকে ‘একতরফা ভাবে’ বেছে নিয়েছিলেন রাজ্যপাল। ইস্তফা দিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অমিতাভ দত্ত। তাঁকেও অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল আনন্দ বোস।