ইতিহাসের শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তর লিখেও কিছু প্রশ্নে নম্বর না-পাওয়ায় ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই)-এর দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক প্রার্থী। এনসিটিই জানিয়ে দেয়, ওই প্রার্থী সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলির যে-উত্তর লিখেছেন, তার সবই ঠিক। এনসিটিই যে-সব প্রশ্নের উত্তর ঠিক বলে জানিয়েছে, এ রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) তা মানবে না কেন, প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি শম্পা সরকার বুধবার এসএসসি-কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, কেন ওই সব উত্তর ঠিক বলে মানা হচ্ছে না, ছ’সপ্তাহের মধ্যে তাঁর আদালতে হলফনামা দিয়ে তা জানাতে হবে।
ঘটনাটি কী? মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা সুধৃতি গঙ্গোপাধ্যায় ২০১২ সালের ‘স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট’ (নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ) দিয়েছিলেন। তাঁর বিষয় ছিল ইতিহাস। তাঁর আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী জানান, ওই বছর পরীক্ষার ফলপ্রকাশের পরে দেখা যায়, মেধা-তালিকায় তাঁর মক্কেলের নাম নেই। তথ্য জানার অধিকার (আরটিআই) আইনে ওই প্রার্থী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান, তিনি যে-সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, তা ঠিক কি না। আরটিআই-কর্তৃপক্ষের জবাব না পেয়ে সুধৃতি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। তখন এসএসসি-কর্তৃপক্ষ ওই প্রার্থীকে তাঁর উত্তরপত্র পাঠিয়ে দেন।
আশিসবাবু জানান, তাঁর মক্কেল উত্তরপত্র পেয়ে দেখেন, তিনি ১০টি প্রশ্নের যে-উত্তর দিয়েছেন, তা তাঁর কাছে ঠিক বলে মনে হলেও তাঁকে নম্বর দেওয়া হয়নি। এর পরে তিনি এনসিটিই-র কাছে জানতে চান, ওই ১০টি প্রশ্নের ঠিক উত্তর কী। এনসিটিই ওই প্রার্থীকে প্রয়োজনীয় নথি দিয়ে জানায়, তিনি যে-সব উত্তর দিয়েছেন, সেগুলোই ঠিক। ইতিমধ্যে বছর ছয়েক গড়িয়ে গিয়েছে। এনসিটিই-র দেওয়া নথি এসএসসি-কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করে ওই প্রার্থী জানতে চান, তিনি ঠিক উত্তর লেখা সত্ত্বেও তাঁর নাম মেধা-তালিকায় উঠল না কেন? এসএসসি-র কাছ থেকে উত্তর না-পেয়ে গত বছর হাইকোর্টে মামলা করেন ওই প্রার্থী।
এসএসসি-র আইনজীবী সুতনু পাত্র এ দিন আদালতে জানান, উত্তর ঠিক কি না, কমিশন-কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তা জেনে এসে তিনি জানাবেন। তা শুনে বিচারপতি সরকার মন্তব্য করেন, ‘‘১০ নম্বর কিন্তু মুখের কথা নয়।’’ তার পরেই এসএসসি-কর্তৃপক্ষকে ওই হলফনামা পেশের নির্দেশ দেন বিচারপতি।