শুভেন্দু অধিকারী।
২১ জুলাইয়ের বদলে অন্য দিন বিজেপিকে সভা করার পরামর্শ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। একই সঙ্গে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য বিজেপির কাছে ওই সভা নিয়ে যাবতীয় তথ্য পেশ করতে বলেছে বুধবার। অর্থাৎ ২১ জুলাইয়ের আগের দিনই। বিজেপিকে জানাতে বলা হয়েছে, বাউড়িয়ায় তাদের কর্মসূচিতে কোন কোন নেতা উপস্থিত থাকবেন। একই সঙ্গে ওই সভায় কত লোকের জমায়েত হতে পারে তারও একটা আগাম আন্দাজ হাই কোর্টকে জানাতে বলেছেন বিচারপতি।
২১ জুলাই উলুবেড়িয়ার ওই সভা মূলত ডেকেছিলেন রাজ্যের বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু পুলিশ সেই সভার অনুমতি না দেওয়ায় বিজেপি কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করে। মঙ্গলবার তারই শুনানি ছিল আদালতে। শুনানি চলাকালীনই বিচারপতি ভট্টাচার্য বিজেপির আইনজীবীকে বলেন, এই সভা ২১ জুলাইয়েই আয়োজন করতে হবে কেন? বিজেপি তো ২২ কিংবা ২৩ জুলাইও সভার আয়োজন করতে পারে।
কেন ২১ জুলাই গুরুত্বপূর্ণ? সে প্রশ্নের জবাব দিতে বিজেপির আইনজীবী সময় চেয়েছিলেন। বিচারপতি তাঁকে দুপুর ৩টে ২০ মিনিট পর্যন্ত সময় দেন। পরে মামলাটির শুনানি শুরু হলে বিজেপির আইনজীবী জানান, দিল্লি থেকে অনেক নেতা আসছেন। তাঁদের ওই তারিখের কথা বলা হয়ে গিয়েছে। সভার সব প্রস্তুতি নেওয়াও হয়ে গিয়েছে। তাই ২১ জুলাই সভা করা জরুরি।
বিজেপির ওই আইনজীবী এ কথাও বলেন যে, ওই সভায় দু’হাজারের মতো লোক হবে। ওই দিন অন্য রাজনৈতিক দলের সভা থাকলেও তাতে কোনও প্রভাব পড়বে না। বিচারপতিকে বিজেপি জানায়, ১৫ দিন আগে সভার অনুমতি চাওয়া হলেও অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিজেপির আইনজীবী বলেন, দরকার হলে আমাদের সন্ধ্যা ৬টায় সময় সভা করতে দেওয়া হোক। তাতেও অসুবিধা নেই।
কিন্তু বিজেপির আইনজীবীর এই বক্তব্যের পাল্টা বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনাদের এই কর্মসূচির জন্য দিল্লি থেকে নেতারা আসছেন? আপনারা জানেন ওই দিন কলকাতায় একটি বড় সমাবেশ রয়েছে। শহরের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আপনাদের নেতারা কী ভাবে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে হাওড়ার কর্মসূচিতে যাবেন? উড়ে যাবেন?’’
বিজেপির ওই আইনজীবী আদালতকে যুক্তি দিয়েছিলেন, রাজ্যে একটি রাজনৈতিক দল জনসভা করবে বলে অন্য দল করতে পারবে না? জবাবে হাই কোর্টের বিচারপতি তাঁকে বলেন, ‘‘একটি রাজনৈতিক দল কর্মসূচি করবে বলে অন্যরা করতে পারবে না, এটা যেমন হতে পারে না, তেমন সেই দিনের বাস্তব পরিস্থিতিও তো বিচার করতে হবে।’’
আদালত স্পষ্টতই বিজেপিকে জানিয়ে দেয়, ‘‘অন্য দিন করুন। আগামিকালই করুন না, কেউ তো বারণ করছে না! ওই দিনই কেন?’’