বিজেপি নেতা চন্দ্রকুমার বসু। —ফাইল চিত্র
সোমবারই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং এনআরসি-র সমর্থনে কলকাতায় বিশাল মিছিল করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি জে পি নড্ডা। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার উল্টো পথে হাঁটলেন রাজ্যেরই বিজেপি নেতা চন্দ্রকুমার বসু। পর পর টুইটে নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলে ‘মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করা’র পক্ষে সওয়াল করেছেন চন্দ্রকুমার। ভারত ‘সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের জন্য উন্মুক্ত’ বলেও মন্তব্য করেন নেতাজি পরিবারের সদস্য এই বিজেপি নেতা। নড্ডার সভা করার পরেই চন্দ্রকুমারের এই টুইট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
টুইটারে চন্দ্রকুমার বসু লিখেছেন, ‘‘সিএএ-২০১৯ যদি কোনও ধর্মের জন্য না হয়, তাহলে কেন হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান জৈন ও পার্সিদের কথা উল্লেখ করছি! কেন মুসলিমদেরও অন্তর্ভুক্ত করছি না? আসুন স্বচ্ছ হই।’’ নিজের এই অবস্থানের পক্ষে অন্য টুইটে তাঁর যুক্তি, ‘‘মুসলিমরা যদি নিজেদের দেশে অত্যাচারিত না হন, তাহলে তাঁরা এ দেশে আসতেন না। তাই তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করায় কোনও ক্ষতি নেই। তা ছাড়া এই ধারণা পুরোপুরি সত্যিও নয়— পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে বসবাসকারী বালুচ মুসলিম বা পাকিস্তানের আহমদিয়া মুসলিমদের কী অবস্থা?’’
অন্য একটি টুইটে তাঁর বক্তব্য, অন্য কোনও দেশের সঙ্গে ভারতর তুলনা করবেন না। কারণ এই দেশ সমস্ত ধর্ম ও সম্প্রদায়ের জন্য উন্মুক্ত।
বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পার্সি জৈন সম্প্রদায়ের শরনার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নয়া নাগরিকত্ব আইনে। সংসদে এই আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ-মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে প্রায় গোটা দেশ।
তার মধ্যে আবার পশ্চিমবঙ্গেই প্রথম শুরু হয় আন্দোলন। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক-সহ অনেক রাজ্যেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এ রাজ্যে এখনও প্রায় প্রতিদিনই সিএএ-এনআরসির প্রতিবাদে মিছিল করছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার শ্যামবাজারে সভা করেন নড্ডা। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁরই দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা চন্দ্রকুমার বোসের এই অবস্থানে স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তি বেড়েছে বিজেপির।