ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশন স্কুলের বুথে ভোট দেওয়ার পরে মমতা বন্দোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
বড় কোনও ঘটনা বা অভিযোগ ছাড়াই নজরকাড়া ভবানীপুরে উপনির্বাচন পর্ব মোটামুটি নির্বিঘ্নে সাঙ্গ হল। শেষ হয়েছে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর এবং শমসেরগঞ্জের বকেয়া থাকা সাধারণ নির্বাচনও। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতরের দাবি, বৃহস্পতিবার যে-অভিযোগ এসেছে, তা মোটেই গুরুতর নয়।
ভোটের সময় প্রধানত সি-ভিজিল এবং এনজিএস— এই দুই পোর্টালের মাধ্যমে অভিযোগ গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন। সিইও দফতরের দাবি, এ দিন সি-ভিজিলে কোনও অভিযোগই জমা পড়েনি। এনজিএসে এসেছে ২০টি অভিযোগ। তার মধ্যে ভবানীপুর থেকে ১২টি অভিযোগ পেয়েছে কমিশন, শমসেরগঞ্জ থেকে আটটি। জঙ্গিপুর থেকে একটিও নয়। সিইও দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘দিল্লির নির্বাচন সদনে গুরুতর কোনও অভিযোগের তথ্য যে পাঠাতে হয়নি, সেটাই স্বস্তির।’’
এ দিন সকাল থেকেই নজরদারির প্রশ্নে চূড়ান্ত তৎপরতা ছিল সিইও কার্যালয়ে। ভবানীপুরের সব ভোটকেন্দ্রে ওয়েবকাস্টের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। ফলে সেই সব কেন্দ্রে ভোটের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভোট-প্রক্রিয়ার উপরে সরাসরি নজরদারি রাখতে পেরেছিল কমিশন। তা ছাড়া ওই কেন্দ্রের সব বুথে সিসি ক্যামেরা ছাড়াও মাইক্রো অবজ়ার্ভার ছিলেন। কোনও ভোটকেন্দ্র থেকে ভোট-প্রক্রিয়া নিয়ে কোনও অভিযোগ পায়নি দফতর। ‘‘যে-ক’টি অভিযোগ কমিশনের কাছে এসেছিল, তা সহজেই তৎক্ষণাৎ মিটিয়ে দেওয়া হয়। বেশির ভাগ অভিযোগেরই সারবত্তা ছিল না,’’ বলেন দফতরের এক কর্তা।
গত বিধানসভা ভোটের সময় মুর্শিদাবাদ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপরে বাড়তি নজর দিয়েছিল কমিশন। ভোটের আগে সেখানে আইনশৃঙ্খলার গুরুতর সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তাই এ বারের ভোটে ওই জেলায় বিশেষ নজর রাখা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত যে-ভাবে জেলার দু’টি আসনে ভোট মিটেছে, তাতে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন কমিশন-কর্তারা। রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন মাঝেমধ্যেই ফোন করে পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়েছিলেন বলে কমিশনের খবর।
সিইও দফতরকে সব চেয়ে বেশি স্বস্তি দিয়েছে ভবানীপুরের পরিস্থিতি। গত বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনশৃঙ্খলার গুরুতর সমস্যা হয়েছিল সেই ভোটে। এমনকি ভোট-প্রক্রিয়া নিয়েও অভিযোগ তুলতে ছাড়েনি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাই ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনে আগে থেকেই নিরাপত্তার ব্যাপক বন্দোবস্ত রেখেছিল কমিশন। প্রথমে ১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে আরও ২০ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েন করা হয় সেখানে। সেই সব প্রস্তুতির পরে নির্বিঘ্নে ভোট করাতে পেরে সিইও কার্যালয় স্বস্তিতে।