চলছে আলোচনা। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘ আলোচনার পরেও সমাধানসূত্র মেলেনি শনিবার। রবিবার ফের স্মারকলিপি দিলেন ব্যবসায়ীরা। তবে পৌষমেলা নিয়ে সমস্ত সংশয় কাটল না এ দিনও।
শনিবার দেখা গিয়েছিল মেলার মাঠে ক্রিকেট খেলা হচ্ছে। রবিবার মেলার প্রস্তুতি হিসেবে মাঠে কেবল মাপজোকের কাজ নজরে পড়ল। এক বছর আগে এই দিনে অবশ্য মেলার দোকান তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। এ বার এখনও সে সব কিছু চোখে না পড়ায় কী করে এত কম সময়ে মেলার আয়োজন হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
শনিবার পৌষ মেলা নিয়ে ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টারও বেশি বৈঠক করেও কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি। ব্যবসায়ী সমিতি তাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে জানানোর কথা জানিয়েছিল। সেই মতো এ দিন বোলপুরের সমস্ত ব্যবসায়ী ও মেলায় অংশগ্রহণকারী দোকানদারের মিলে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেছিলেন শান্তিনিকেতনের মেলার মাঠে।
ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে খবর, এ দিনের আলোচনা থেকে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন শনিবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মেলায় স্টল বসানোর ক্ষেত্রে যে ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল তা বাড়িয়ে ৭০ শতাংশ ছাড় দিতে হবে ও মেলায় স্টল বসানোর ক্ষেত্রে সিকিউরিটি মানি উপর যে ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল সেটি পুরোপুরি মকুব করতে
হবে। সেই সঙ্গে চার দিনের মেলা ও দু’দিনের ভাঙা মেলা করার প্রস্তাব ও অনলাইনের পাশাপাশি বিগত বছরগুলিতে মেলা প্রাঙ্গণে যে জায়গায় ব্যবসায়ীদের স্টল করতে দেওয়া হয়েছে সেখানে এ বারও তাঁদের বসতে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এই সমস্ত দাবি নিয়ে এ দিন ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে আরও একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে। এ দিন উপাচার্য না থাকায় স্মারকলিপিটি নেন বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক। তিনি ব্যবসায়ীদের জানান, তাঁদের দাবিগুলি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সেইমতো ব্যবসায়ী সমিতিকে তাঁদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানা গিয়েছে।
ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ বলেন, ‘‘শনিবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যে দু’টি প্রস্তাব দিয়েছিলেন সেই প্রস্তাব অনুযায়ী এ দিন আমরা নিজেদের মধ্যে একটি আলোচনায় বসেছিলাম। পৌষ মেলায় স্টল বসানোর ক্ষেত্রে শনিবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আমরা চাই স্টল বসানোর ক্ষেত্রে বিশ্বভারতী যেন আমাদের ৭০ শতাংশ ছাড় দেয়। সিকিউরিটি মানি জমা রাখার ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ছাড় নয়, আমরা সিকিউরিটি মানি একেবারে মকুব করার আবেদন জানিয়েছি। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন আমাদের।’’
২৪ ডিসেম্বর থেকে পৌষমেলা শুরু। প্রস্তুতির জন্য বাকি হাতেগোনা মাত্র কয়েকটা দিন মেলার বাকি। এই পরিস্থিতিতে মেলার স্টল নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিশ্বভারতীর মতবিরোধের জেরে পৌষ মেলা ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে বলে মত অনেকেরই। এখনও পর্যন্ত মাঠে মেলা বসার প্রস্তুতি হিসেবে খুঁটি পোতার কাজই শুরু হয়নি। এ দিন মেলার মাঠে চুন দিয়ে নানা জায়গা নির্দিষ্ট করার কাজ করতে দেখা গিয়েছে কর্মীদের।