বেসরকারি বাসের ভাড়া নিয়ে বাড়ছে সঙ্ঘাত। —ফাইল চিত্র।
বেসরকারি বাসের ভাড়া কত হবে? তা এ বার নিজেরাই ঠিক করতে চান বেসরকারি বাসমালিকেরা। গত ৯ বছর ধরে বেসরকারি বাসের ভাড়া সরকারের তরফে বাড়ানো হয়নি বলেই পরিবহণ দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ। আগামী দিনেও যে, বেসরকারি বাসের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে রাজ্য সরকারের কোনও ভাবনা নেই, তা বুধবার কলকাতা হাইকোর্টকে দেওয়া পরিবহণ দফতরের একটি হলফনামায় প্রকাশ পেয়েছে বলেই দাবি মালিকদের। হলফনামায় রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বেঁধে দেওয়া ভাড়াই নেবে রাজ্যের বেসরকারি বাস এবং মিনিবাসগুলি, কোনও ভাড়া বাড়ানো হয়নি। অতিরিক্ত ভাড়া যাতে না নেওয়া হয় তা নিশ্চিত করা হবে। কলকাতা হাইকোর্টে এই মর্মে হলফনামা জমা দিয়েছেন পরিবহণ দফতরের বিশেষ সচিব অনিন্দ্য সেনগুপ্ত।
হলফনামায় পরিবহণ দপ্তরের বিশেষ সচিব জানিয়েছেন, বাসে সর্বনিম্ন ৭ টাকা এবং মিনিবাসে সর্বনিম্ন ৮ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হয়। তবে কার্যকরী ক্ষেত্রে বেসরকারি বাস মালিকরা নিজেদের মতো করেই ভাড়া নেওয়া শুরু করেছেন। বাসে উঠলে ন্যূনতম ১০ টাকা, সর্বোচ্চ ১৮ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে এখন। তবে পাল্টা পরিবহণ দফতরও জানিয়ে দিয়েছে, কোনও যাত্রী যদি অতিরিক্ত বাসভাড়া নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন, তবে অভিযুক্ত বাসের পারমিট বাতিল করা হবে।
কিন্তু সরকারের এমন কঠিন ঘোষণার পরেও নিজেদের ভাড়া নেওয়ার পন্থায় অনড় বেসরকারি বাস মালিকরা। সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের তরফে টিটু সাহা বলেন, ‘‘আমরা চাই বাসের ভাড়া নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিষয়টি ছেড়ে দেওয়া হোক বাস মালিকদের ওপরেই। কারণ এই পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা সরকারের থেকে কোনওরকম আর্থিক সাহায্য তো দূর, ন্যূনতম সহযোগিতাও পাই না। সব ক্ষেত্রেই ক্ষতি বা খরচ যাই হোক না কেন, বাস মালিকদেরই সেই দায় বহন করতে হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে সরকারের যেমন নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে কিন্তু তেমনটা নেই। তাই আমাদের ভাড়া নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও আমাদের উপরেই ছেড়ে দেওয়া হোক।’’
আগামী জানুয়ারি মাসে আবারও বাস ভাড়া সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেখানে আদালত কি রায় দেয়, সেদিকেই তাকিয়ে পরিবহণ দফতর এবং বাস মালিকেরা।