বাস ভাড়া দেওয়ার আগে বকেয়া মেটানোর দাবি বাস মালিকদের। ফাইল চিত্র
পুরভোটের আগেই পরিবহণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সমস্যায় পড়তে চলেছে নির্বাচন কমিশন। কলকাতা ও হাওড়ার পুরভোটের ঘোষণার অপেক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু ভোট ঘোষণার প্রাক্-মুহুর্তে পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন কমিশনকে বাস ভাড়া দিতে আপত্তির কথা জানিয়েছেন।
প্রত্যেক ভোটের সময় বেসরকারি বাস মালিকদের থেকে ভাড়া বাস নেয় নির্বাচন কমিশন। লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে রাজ্য সরকার মারফৎ সেই বাস ভাড়া নেয় নির্বাচন কমিশন। তাদের দায়িত্বে থাকেন এ রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে সেই দায়িত্ব পালন করেন ভোটের রিটার্নিং অফিসার। কলকাতা পুরভোটে সেই দায়িত্বে রয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক। কলকাতার পুরভোট পরিচালনা করতে তিনিই রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে। তাঁর দফতর মারফৎ জেলা আরটিও-কে অফিসে মোট ৬০০টি বাস ভাড়া নিতে বলা হয়েছে। তারপরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আরটিও অফিস থেকে বেসরকারি বাস মালিকদের সঙ্গে যোগোযোগ করে বাস চাওয়া হয়েছে।
প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বাস মালিকরা তাদের অবস্থান জানিয়ে বেশকিছু দাবিদাওয়া রেখেছেন। সূত্রের খবর, গত বিধানসভা ভোটে কলকাতার ১১টি বিধানসভার জন্য মোট ৩৭৩টি বেসরকারি বাস ভাড়া নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কলকাতা উত্তরের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য বাসে ভাড়া ৭০ শতাংশ ও দক্ষিণ কলকাতার চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ৮০ শতাংশ ভাড়া মিটিয়ে দেওয়া হলেও, পুরো ভাড়া এখনও বাকি রয়ে গিয়েছে। করোনা সংক্রমণের কারণে বাস মালিকদের আর্থিক অবস্থা ইতিমধ্যেই বেহাল হয়েছে। আর ছয় মাস যাবৎ তাঁরা বাসের পুরো ভাড়া না পাওয়ায় বেজায় ক্ষুব্ধ। তাই তাঁরা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আরটিও-কে জানিয়ে দিয়েছেন আগের বকেয়া অর্থের সঙ্গে নতুন করে ভাড়া নেওয়া বাসের অগ্রিম না পেলে কোনও অবস্থাতেই তাঁরা বাস ভাড়া দেবেন না।
সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের পক্ষে টিটো সাহা বলেন, ‘‘আমাদের বাস ভাড়া দিতে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকারকে আমাদের অসুবিধার কথাও বুঝতে হবে। এখনও বিধানসভা ভোটে ভাড়া দেওয়া বাসের ভাড়া আমরা পাইনি। তার ওপর নতুন করে বাস ভাড়া নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। যদি, আমাদের দাবিগুলি কমিশন ও সরকার উভয় বিবেচনা করতে রাজি হয়। তবেই আমরা বাস ভাড়া দেব।’’ সূত্রের খবর, কলকাতা ও হাওড়ার পুরভোট মিটে গেলে রাজ্যে আরও ১১৫টি পুরসভার ভোট হবে। বাস মালিকরা মনে করছে, এখন তাদের দাবি না মানা হলে আগামী দিনেও তাঁরা আর বকেয়া অর্থ পাবেন না।বুধবারই বেশকিছু দাবিদাওয়া নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে প্রদীপনারায়ণ বসুও। তিনি আবার ভাড়ার ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ অর্থ বেশি দেওয়ার দাবি জানিয়ে এসেছেন। কমিশন সূত্রে খবর, বাস মালিকদের দাবিদাওয়াগুলি নিয়ে আলোচনায় বসতে পারেন তাঁরা।