CPM

এ বার পদযাত্রায় গ্রামে গ্রামে পৌঁছতে চায় সিপিএম

শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ এবং শাসক দলের নেতা-মন্ত্রী ও প্রশাসনিক কর্তাদের গ্রেফতার তরুণ প্রজন্মের মধ্যেই বেশি প্রভাব ফেলেছে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:২৮
Share:

সব জেলায় সব পঞ্চায়েত সমিতি ছুঁয়ে যাওয়া আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের লক্ষ্য। ফাইল চিত্র।

লোকসভার পরে বিধানসভা ভোটেও ঝুলি ছিল শূন্য। কিন্তু বছরদেড়েকের মধ্যে আন্দোলন বা কর্মসূচিতে আবার সাড়া মিলছে। ফিরতে শুরু করেছে ভিড়। ধর্মতলায় যুব ও ছাত্র সংগঠনের সমাবেশ সব মহলেরই চোখ টেনেছে। ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবং সংগঠনকে চাঙ্গা রাখতে এ বার রাজ্য জুড়ে পদযাত্রার পরিকল্পনা করছে সিপিএম। পুজোর পরে ওই পদযাত্রা বা জাঠার মাধ্যমে সব জেলায় সব পঞ্চায়েত সমিতি ছুঁয়ে যাওয়া আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের লক্ষ্য।

Advertisement

শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ এবং শাসক দলের নেতা-মন্ত্রী ও প্রশাসনিক কর্তাদের গ্রেফতার তরুণ প্রজন্মের মধ্যেই বেশি প্রভাব ফেলেছে। দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন সিপিএম চালাচ্ছে মূলত যুব ও ছাত্র সংগঠনকে সামনে রেখে। চলতি মাসেই কলকাতা শহরে দু’টি (কলেজ স্ট্রিট ও ধর্মতলা) বড় সমাবেশ হয়েছে ছাত্র ও যুব ফ্রন্টের মঞ্চ থেকে। পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেখে নভেম্বরে পদযাত্রার কথা ভাবা হচ্ছে কৃষক ও শ্রমিক সংগঠনকে নিয়ে। তবে গণ-সংগঠনের উদ্যোগে হলেও গোটা দলই সেখানে যুক্ত থাকবে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে ওই পরিকল্পনা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে জাঠার শেষে বড় আকারে কেন্দ্রীয় সমাবেশও হতে পারে।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘ধর্মতলায় ছাত্র ও যুব সমাবেশ থেকে উৎসাহ বা উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, তাকে সাংগঠনিক ভাবে কাজে লাগাতে হবে। লড়াই নিয়ে যেতে হবে বুথ স্তরে। জাঠা বা পদযাত্রা এমন ভাবে করার কথা ভাবা হচ্ছে, যা সব জেলায় প্রতি পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় অন্তত পৌঁছতে পারে। এমনিতেই এখন উৎসবের মরসুম। যুব সমাবেশের পরে বড় কোনও কেন্দ্রীয় সমাবেশ আপাতত হবে না। এর পরে যা হবে, সেটা ওই যুব সমাবেশের উচ্চতা ধরে রেখেই করতে হবে।’’ সেই কারণেই পদযাত্রার সমাপ্তি লগ্নে সমাবেশ হতে পারে, যেখানে গোটা সংগঠন অংশগ্রহণ করবে।

Advertisement

পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের পাশাপাশি স্থানীয় স্তরের দাবি-দাওয়া পদযাত্রায় তুলে আনার চেষ্টা করবে সিপিএম। তাদের ‘নজরে পঞ্চায়েত’ কর্মসূচি অল্প দিনেই ভাল সাড়া পাচ্ছে। সিপিএম সূত্রের দাবি, হেল্পলাইনে যা অভিযোগ এসেছে, তার প্রায় ৫৫% তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে এবং পঞ্চায়েতের পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে এসেছে প্রায় ৪০%। এই হেল্পলাইন এবং সাংগঠনিক সূত্রে পাওয়া রসদ হাতে নিয়েই পদযাত্রার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে। প্রসঙ্গত, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র অঙ্গ হিসেবে প্রদেশ কংগ্রেস সাগর থেকে পাহাড় পদযাত্রার কর্মসূচি নিয়েছে আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে। তার আগেই সিপিএমের জাঠা বেরিয়ে পড়লে এ বারের হেমন্ত ও শীত সরগরম থাকবে পদযাত্রায়!

সামনে আসছে উৎসবের বিরতি। সেই সময়ে একেবারে পাড়া, মহল্লা স্তরে জনসংযোগের ছকও তৈরি করে নেতা-কর্মীদের দিয়েছে আলিমুদ্দিন। উৎসবের মধ্যে বড় কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকবে না। এই সময়ে এলাকায় বসে যাওয়া বা ‘নিষ্ক্রিয়’ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দলের সংযোগ ফেরানোর প্রয়াস চলবে। রীতিমতো তালিকা তৈরি করে পুরনো নেতা-কর্মীদের কাছে পৌঁছনোর পরামর্শ দলের কর্মীদের দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘নতুনেরা খুব ভাল কাজ করছেন। কিন্তু পুরনোদের সঙ্গে নেওয়ার চেষ্টাও একেবারে দায়িত্ব নিয়ে করতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement