হাসপাতালের ভিতরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র
মিনিটে ৩ লিটার অক্সিজেন দিতে হচ্ছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। আপাতত রক্তে অক্সিজেনের মাত্রাও পৌঁছেছে ৯২ শতাংশে। তবে তাঁর ফুসফুসে নতুন কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। আপাতত তা নিয়েই ছ’জনের বিশেষ মেডিক্যাল টিম আলোচনায় বসেছে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে। তবে অসুস্থ হলেও বুদ্ধদেবের জ্ঞান রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
করোনায় আক্রান্ত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থার অবনতি হয় সোমবার রাত থেকেই। তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৮০-র কাছাকাছি নেমে যায়। পরে মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে ভর্তি করানো হয় দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ভর্তি হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার খবর জানিয়ে মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করে হাসপাতালটি। তাতে জানানো হয়েছে, আপাতত বুদ্ধদেবের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁর চিকিৎসায় ছয় সদস্যের মেডিক্যাল টিম তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া সিটি স্ক্যানও করানো হয়েছে বুদ্ধদেবের। বেশ কিছু রক্ত পরীক্ষাও হয়েছে। বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ওই সব পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে এলে আরও স্পষ্ট করে বলা যাবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেমন আছেন।
বুদ্ধদেবের চিকিৎসায় দায়িত্বে থাকা ছ’জনের মেডিক্যাল টিমে রয়েছেন, চিকিৎসক সৌতিক পান্ডা, কৌশিক চক্রবর্তী, সোমনাথ মাইতি, কার্ডিওলজিস্ট সরোজ মণ্ডল, অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ধ্রুব ভট্টাচার্য। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছিল বুদ্ধদেবের। বাধ্য হয়েই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। আপাতত মিনিটে ৩ লিটার অক্সিজেন দিতে হচ্ছে তাঁকে। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রাও পৌঁছেছে ৯২ শতাংশে।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সিওপিডির সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যা বাড়লে শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। তবে বুদ্ধদেবের শারীরিক অবনতির কারণ সিওপিডির সমস্যা কি না, তা এখনও জানা যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন চিকিৎসকেরা। এর পাশাপাশি বুদ্ধদেবের ফুসফুসে নতুন সমস্যা নিয়ে আপাতত রেডিওলজিস্টদের সঙ্গে কথা বলছেন ৬ সদস্যের মেডিক্যাল টিম। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে বাইপ্যাপের সাপোর্টও দেওয়া হচ্ছে। চলছে অ্যান্টিবায়োটিক এবং স্টেরয়েডও।
তবে চিকিৎসার পদ্ধতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মিউকোরমাইকোসিসে সংক্রমণের কথাও মাথায় রাখছেন চিকিৎসকরা। করোনার সঙ্গে মধুমেহ রোগের সমস্যা এবং স্টেরয়েড চিকিৎসা করানো হলে এই ছত্রাক সংক্রমণের সমস্যা দেখা যাচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে বলা হচ্ছে। তাই সেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা মাথায় রেখেই চিকিৎসা চলছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। দিনে তিনবার তাঁর সুগার চেক করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে মেডিক্যাল বুলেটিনে।
(‘মিউকরমাইকোসিস’ আদৌ ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ নয়। বস্তুত, ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ বলে কোনও রোগ নেই বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।)