BSF Terrorist Clash

রাবার বুলেটে বাংলাদেশি ‘দুষ্কৃতী’ জখম

শুক্রবার জলপাইগুড়ির চাণক্য বিওপি-তে সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের হামলার জেরে জেলার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সব চৌকিতে জওয়ানের সংখ্যা বাড়িয়েছে বিএসএফ।

Advertisement
জলপাইগুড়ি, কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:৩৪
Share:

বিএসএফ জওয়ান। —ফাইল চিত্র।

এ বার ‘গুলি’ চলল কোচবিহারের দিনহাটার গীতালদহ সীমান্তে। বিএসএফের রাবার বুলেটে জখম হলেন এক বাংলাদেশি নাগরিক। সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর দাবি, ওই ব্যক্তি গরু পাচারের সঙ্গে জড়িত। শনিবার ভোরে দিনহাটা ১ ব্লকে বাংলাদেশ সীমান্তের মদনাকুড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। বিএসএফ সূত্রে খবর, রাবার বুলেটে বাংলাদেশের লালমনিরহাটের এক বাসিন্দা জখম হন। বিএসএফ জানায়, জখম ব্যক্তির নাম হেলাল হোসেন। তাঁকে কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

Advertisement

বিএসএফের এক আধিকারিক বলেন, “রাতের অন্ধকারে গরু পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। বিএসএফ জওয়ানেরা রুখতে গেলে তাঁদের উপরে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। বাধ্য হয়ে জওয়ানেরা রাবার বুলেট ছোড়েন।” দিনহাটা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ধীমান মিত্র বলেন, “ওই ঘটনা নিয়ে শনিবার রাত পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।”

এ দিকে, শুক্রবার জলপাইগুড়ির চাণক্য বিওপি-তে সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের হামলার জেরে জেলার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সব চৌকিতে জওয়ানের সংখ্যা বাড়িয়েছে বিএসএফ। শনিবার থেকে সীমান্তের নজরদারি ছাউনিতেও অতিরিক্ত জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। বিএসএফ সূত্রে খবর, কাঁটাতারহীন সীমান্তের গ্রামগুলিতে ‘জ়িরো পয়েন্টের’ কাছাকাছি ভারতীয় নাগরিকদেরও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কাঁটাতারের বেড়ার ও-পারে ভারতীয় ভূখণ্ডে যে সব গ্রাম রয়েছে, এ দিন থেকে সেখানে বহিরাগতদের ঢোকা পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে।

Advertisement

সূত্রের খবর, বিএসএফের তরফে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের নীলফামারি ইউনিটের কাছে জরুরি বার্তা পাঠানো হয়েছে। সেই বার্তায় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ‘সক্রিয়’ হতে বলা হয়েছে। গভীর রাতে সীমান্তে নজরদারি চালাতেও বলা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, সম্প্রতি তথ্য মিলেছে, রাতে সীমান্তবর্তী এলাকায় বাংলাদেশের বাহিনীর কোনও নজরদারি থাকছে না। তা দু’দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত ‘বিপজ্জনক’ বলে দাবি করা হয়েছে। রাতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নজরদারি থাকলে শুক্রবার ভোরে ভারতের চাণক্য সীমান্ত চৌকিতে বাংলাদেশের সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের হামলার ঘটনা সম্ভব হত না বলেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন।

জলপাইগুড়ি জেলায় সীমান্তবর্তী প্রায় ১৭ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। ওই এলাকাগুলি বিএসএফের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁডিয়েছে। সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফেও ওই এলাকাগুলিকে ‘রেড স্পট’ বলে চিহ্নিত করে বার্তা পাঠানো হয়েছে।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মূলত দু’টি আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রথমত বাংলাদেশে অস্থিরতা চলতে থাকায় এই এলাকাগুলি দিয়ে সে দেশের সংখ্যালঘু বাসিন্দা এবং সংখ্যালঘুদের ছদ্মবেশে জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যরা ঢুকে পড়তে পারে। দ্বিতীয়ত, পরিকল্পিত ভাবে টহলরত বিএসএফ জওয়ানদের প্ররোচিত করা হতে পারে। সে কারণেই কাঁটাতারহীন এলাকাগুলির নজরদারি ছাউনিগুলিতে এক জনের পরিবর্তে দুই থেকে চার জন করে জওয়ান মোতায়েন করা হচ্ছে। সূত্রের দাবি, পরিস্থিতি বিচার করে ‘জ়িরো পয়েন্টের’ থেকে এগিয়ে যেতেও বিএসএফ জওয়ানদের কিছু এলাকায় ছাড় দেওয়া হয়েছে। কাঁটাতার লাগোয়া সীমান্তের রাস্তাতেও অচেনা বা বহিরাগত ব্যক্তিদের চলাচলের উপরে নজর রাখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement