Durga Puja 2024

পুজোয় রোজগার কমেছে, মনখারাপ জরিশিল্পীদের

হাওড়ার পাঁচলা, সাঁকরাইল জরির কাজের জন্য প্রসিদ্ধ। এই এলাকার শিল্পীদের কাজ শুধু দেশের বাজার নয়, বিদেশেও যায়। কিন্তু এ বছর মুখে হাসি নেই শিল্পীদের।

Advertisement

নুরুল আবসার

পাঁচলা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:১২
Share:

জরির কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

ব্যবসায় মন্দা নিয়ে অভিযোগ নতুন নয় জরিশিল্পীদের। তবে প্রতি বছরই পুজোর অপেক্ষায় থাকেন তাঁরা। কারণ, বিক্রি কিছুটা হলেও বাড়ে সেই সময়। তবে চলতি বছরে আর জি কর কাণ্ডের জেরে ব্যবসা বিশেষ জমেনি বলে জানালেন জরিশিল্পীরা। হাওড়ার পাঁচলা, সাঁকরাইল জরির কাজের জন্য প্রসিদ্ধ। এই এলাকার শিল্পীদের কাজ শুধু দেশের বাজার নয়, বিদেশেও যায়। কিন্তু এ বছর মুখে হাসি নেই শিল্পীদের।

Advertisement

কী ভাবে চলে জরির কাজ? পাঁচলা, সাঁকরাইলের ওস্তাগরেরা (এঁরা কাজটি বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আনেন এবং কারিগর নিয়োগ করে কাজটি করান) জানান, কলকাতার বড়বাজার, চিৎপুর এলাকা থেকে তাঁরা বরাত আনেন। এর পর কাজ করিয়ে ফের তা সেখানে জমা দিয়ে আসেন। তার পরেই মেলে মজুরি। সেটাই তাঁরা কারিগরদের মধ্যে ভাগ করে দেন। বরাত আসে দিল্লি, মুম্বই থেকেও। দুর্গাপুজোর সময়ে এই বরাতের পরিমাণ বাড়ে।

কিন্তু চলতি বছরের ছবিটা ভিন্ন। ওস্তাগরেরা জানান, বড়বাজার, চিৎপুরের ব্যবসায়ীদের থেকে বরাত মিলেছে। তবে ভিন্ রাজ্যের কাজ তেমন মেলেনি। সাঁকরাইলের কান্দুয়ার ওস্তাগর মহম্মদ আমিন বলেন, ‘‘আর জি কর কাণ্ডের জেরে রাজ্যে তো মিটিং-মিছিল চলছে। এই পরিস্থিতিতে ভিন্ রাজ্যের ব্যবসায়ীরা এখানে আসতে ভরসা পাচ্ছেন না। ফোনে যে কাজ মিলছে, সেটা যথেষ্ট নয়। এই সুযোগে কলকাতার ব্যবসায়ীরাও আমাদের মজুরি কমিয়ে দিয়েছেন।’’

Advertisement

পাঁচলার জুজারসাহের ওস্তাগর কুতুবুদ্দিন মল্লিকও বলেন, ‘‘প্রতি বছর দিল্লি, বেঙ্গালুরু থেকে ব্যবসায়ীরা এসে, কাজ দেখে, করিয়ে নিয়ে যান। এ বছর অধিকাংশ ব্যবসায়ী আসেননি। ফলে শুধু কলকাতার কাজ করে তেমন লাভ হয়নি। গত বছরের তুলনায় রোজগার প্রায় ২৫ শতাংশ কমেছে।’’

স্থানীয় ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা ফরিদ মোল্লার বক্তব্য, ‘‘আমাদের এলাকার অর্থনীতি মূলত জরির উপরে দাঁড়িয়ে আছে। দীর্ঘদিন ধরে এই শিল্পে মন্দা চলছে। এ বার আর জি কর কাণ্ডের ছায়া পড়েছে ব্যবসায়। সাঁকরাইলে জরি-হাব হয়েছে খাতায় কলমে। সেখান থেকেও তো কোনও সুফল মেলে না!’’ সারা ভারত জরি শিল্পী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মুজিবর রহমান মল্লিকেরও অভিযোগ, ‘‘এই শিল্প সরকারের অবহেলার শিকার।’’

তবে অভিযোগ মানতে নারাজ পাঁচলার বিধায়ক গুলশন মল্লিক। তিনি বলেন, ‘‘সরকার জরিশিল্পীদের জন্য অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ বছর তাঁদের বিক্রি বা রোজগার কমের বিষয়টি শুনিনি। শিল্পীদের সঙ্গে এটা নিয়ে কথা বলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement