কাটমানি-তিরে আক্রমণ বিরোধীর

কয়েক দিন আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোলাবাজির টাকা ফেরাতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরে গত কয়েকদিনে ‘কাটমানি’-বিক্ষোভে ধুন্ধুমার চলছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০১:০৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

অধিবেশন শুরু হতেই কাটমানি-বিতর্কে উত্তাল হল বিধানসভা।

Advertisement

কয়েক দিন আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোলাবাজির টাকা ফেরাতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরে গত কয়েকদিনে ‘কাটমানি’-বিক্ষোভে ধুন্ধুমার চলছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। সেই আঁচে সোমবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হতেই ওয়েলে নেমে স্লোগান, বিক্ষোভের মাধ্যমে ‘কাটমানি’ পরিস্থিতির জন্য খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করলেন বিরোধীরা। কিছুক্ষণ বিক্ষোভের পরে বাম-কংগ্রেস বিধায়কেরা একসঙ্গে কক্ষত্যাগ করেন। এর পরে রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনাতেও সেই ‘কাটমানি’ তিরেই বারবার মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূলকে নিশানা করলেন বিরোধীরা।

পরে ‘কাটমানি’ নিয়ে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি এবং শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি করেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। উত্তর কলকাতায় এক কর্মসূচিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ‘‘ক্ষমতায় আসার আগে তৃণমূলের নেতাদের সম্পত্তি কী ছিল এবং এখন কী হয়েছে, তার তালিকা প্রকাশ করুন।’’

Advertisement

রাজ্যপালের ভাষণের উপর বিতর্কের শুরুতেই কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা অভিযোগ করেন, ‘সবুজসাথী’ প্রকল্পের সাইকেল বাজারদরের থেকে অন্তত হাজার টাকা বেশি দামে কেনা হচ্ছে। এর তদন্ত চাই। ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক আলি ইমরান রামজ্ (ভিক্টর) প্রশ্ন তোলেন, জেলার প্রশাসনিক সভার জন্য খরচ হওয়া কোটি কোটি টাকার বরাত কেন নির্দিষ্ট কয়েকটি ডেকরেটর সংস্থাকে দেওয়া হয়? বিজেপির মনোজ টিগ্গার প্রশ্ন, ‘‘চা-বাগানের জন্য সরকারের বরাদ্দ ১০০কোটি টাকা কি কাটমানিতে চলে গেল?’’

শাসক পক্ষের স্নেহাশিস চক্রবর্তী বিরোধীদের বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি-দুর্নীতি নির্মূলে তৎপর হয়েছেন। তাঁকে সাহায্য না করে আপনারা তৃণমূলের সকলকে চোর বলে দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছেন।’’ পরে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বিধানসভায় নিজের ঘরে ব্যাখ্যা দেন, ‘‘আমার বাড়ি প্রকল্পের সুবিধাভোগীকে প্রথমে ২৫ হাজার টাকা জমা রাখতে হয়। কিন্তু অনেকে সেই টাকার প্রথম কিস্তি তুলে নিয়ে বাড়ি না বানিয়ে বা অর্ধেক বানিয়ে বসে থাকেন। তখন কাউন্সিলররা সরাসরি সুবিধাভোগীর থেকে টাকাটা নিয়ে ঠিকাদারদের মাধ্যমে বাড়ি বানিয়ে দেন। এখানেই বিভ্রান্তি হচ্ছিল। তাই আমি কাউন্সিলরদের অনুরোধ করেছি, ওই টাকা এখন থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা থাকবে। তিনি নিজের টাকা নিজে তুলে বাড়ি তৈরি করবেন।’’

বিভিন্ন নির্মাণ সংস্থার অভিমত অবশ্য অন্য রকম। তাদের বক্তব্য, পুরমন্ত্রী যা বলছেন, তা ঠিক। কিন্তু এর বাইরেও আলাদা ভাবে কাউন্সিলরদের যে টাকা আগাম ‘কাটমানি’ দিতে হয়, সেই হিসেব এর সঙ্গে যুক্ত নয়। আর তা করতে হয় বলেই বহু বাড়ি অর্ধসমাপ্ত বা অসমাপ্ত থেকে যায়। সরাসরি সুবিধাভোগীর থেকে টাকা নিয়ে কাউন্সিলররা ঠিকাদারদের মাধ্যমে বাড়ি বানানোর ব্যবস্থা করলে তাতেও ‘স্বচ্ছতা’র অভাব থাকে বলে নির্মাতাদের অনেকেরই অভিযোগ।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement