রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিকে মাল্যদান করেন অমিত শাহ। এই নিয়ে কটাক্ষ করলেন ব্রাত্য বসু। ছবি সংগৃহীত।
রবীন্দ্রজয়ন্তীতে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে অমিত শাহের সফর ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। ২৫ বৈশাখ ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এই নিয়ে শাহকে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বললেন, ‘‘আমি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খবর নেব পরে, মূর্তিগুলো ঠিক আছে কি না।’’
যে রবীন্দ্রমূর্তিতে মালা পরিয়েছেন শাহ, সেই মূর্তি সম্পর্কে ব্রাত্যের এ হেন মন্তব্য রাজনীতির আঙিনায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আবহে কলকাতায় রোড শো করেছিলেন অমিত শাহ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শাহের রোড শো থেকে হামলার অভিযোগ উঠেছিল। কলেজ স্ট্রিটে বিদ্যাসাগর কলেজে তাণ্ডবের ঘটনা ঘটে। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। যা ঘিরে সরগরম হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে বিজেপি নেতৃত্বকে বরাবরই আক্রমণ করে বাংলার শাসকদল। মঙ্গলবার রবীন্দ্রনাথের মূর্তিতে শাহের মাল্যদানের পর ব্রাত্যের এই মন্তব্য তাই তাৎপর্যপূর্ণ।
২০১৯ সালেই কলকাতার অদূরে সল্টলেকের সেক্টর ৩ এলাকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল। মূর্তি ভাঙতে দেখা গিয়েছিল এক ট্যাক্সিচালককে। এই ঘটনা ঘিরেও রাজনৈতিক চাপান-উতোর চলেছিল। ওই ট্যাক্সিচালক বিজেপি কর্মী বলে সেই সময় দাবি করেছিল তৃণমূল। যদিও সেই দাবি অস্বীকার করেছিল পদ্মশিবির।
মঙ্গলবার সকালে জোড়াসাঁকো গিয়ে প্রথমে রবীন্দ্রমূর্তিতে মালা পরান শাহ। তার পর জোড়াসাঁকোয় কবিগুরুর জন্মকক্ষ, প্রয়াণকক্ষ, বিচিত্রা ভবন ঘুরে দেখেন। ঠাকুরবাড়ির বিভিন্ন আসবাবপত্রও দেখেন তিনি। পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মসময়, তিথি নিয়ে তথ্য জানতে চান শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের পরই জোড়াসাঁকোয় গিয়ে এই নিয়ে সরব হয়েছেন ব্রাত্য। বলেছেন, ‘‘উনি এখানে আসতেই পারেন। শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতেই পারেন।’’ তার পরই মূর্তি অক্ষত রয়েছে কি না, সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার কথা বলেন ব্রাত্য।
রবীন্দ্রজয়ন্তীতে শাহের রাজ্যে আসা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মণিপুরে অশান্তির ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘উনি বাংলায় আসুন, ওঁকে স্বাগত। আমি এমনও বলছি না, শান্তি ফেরানোর জন্য অশান্তির এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের উপস্থিত থাকতে হবে। কিন্তু বাংলায় কিছু হলেই কিন্তু পরের দিন ওঁরা চলে আসেন। তখন ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও তা মানেন না।’’ মঙ্গলবার শাহকে বিঁধেছেন তৃণমূলের আরও এক মন্ত্রী। ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘‘উনি এখানে আসছেন, অথচ মণিপুরে যাচ্ছেন না। ২০২৪ সালে নির্বাচন রয়েছে, তাই এখন বাংলায় আসছেন। বাংলার আবেগকে নাড়াতে পারবেন না। এ বার ৩৫ কিছুতেই হবে না।’’