রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ফাইল চিত্র।
গত বিধানসভা নির্বাচনে সাফল্যের মধ্যেও মতুয়া প্রধান দক্ষিণ নদিয়ায় ন’টির মধ্যে আটটি আসনে হারতে হয়েছিল তৃণমূলকে। বৃহস্পতিবার সেই মতুয়া তথা নমঃশূদ্র প্রধান ধানতলায় জনসভা করতে এসে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিজেপিকে কার্যত ব্রাহ্মণ্যবাদী দলের তকমা দিয়ে দাবি করেন, “ব্রাহ্মণ্যবাদী পদ্ম এখানে কাজ করবে না।” একই সঙ্গে অসমের উদাহরণ দিয়ে তিনি স্থানীয় মানুষকে হুঁশিয়ার হতে বলেন। মন্তব্য করেন, ‘‘বিজেপিকে যাঁরা ভোট দিচ্ছেন, তাঁদের অবস্থা কালিদাসের মতো হবে।’’ পাল্টা রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “আমরা কোনও সম্প্রদায়কে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বনবাসী, দলিত— এই ভাবে টুকরো করে ভাবি না। এই কথা বলে উনি মতুয়াদের অপমান করেছেন।’’
দক্ষিণ নদিয়া এবং লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনায় মতুয়া ভোট বরাবরই অন্যতম নির্ধারক। নাগরিকত্ব আইনের প্রতি সমর্থন এঁদের বড় অংশকে বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে টেনে এনেছে। গত ৩১ ডিসেম্বর ধানতলায় মতুয়া মহাসম্মেলনে এসে সেই আইন নিয়ে ফের সুর চড়িয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ দিন কার্যত তারই পাল্টা সভায় ব্রাত্য মনে করিয়ে দেন, অসমে এনআরসি করতে গিয়ে বহু মানুষের ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’ স্থান হয়েছে। তাঁর দাবি, “মতুয়াদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে চাইছে বিজেপি। এর পরিণতি মরিচঝাঁপির থেকেও ভয়ানক হবে। বিজেপিকে যাঁরা ভোট দিচ্ছেন, তাঁদের অবস্থা কালিদাসের মতো হবে। যে গাছে বসে রয়েছেন, সেই গাছের ডাল কাটছেন!”
শুভেন্দুর উদ্দেশে ব্রাত্য বলেন, “বিরোধী দলনেতা প্রধানমন্ত্রীকে বলুন, গুজরাতে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে একটি মন্দির করে দেখাতে। পশ্চিমবঙ্গে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিনে সরকারি ছুটি দেওয়া হয়। পাশে ত্রিপুরাতেও বহু মতুয়া আছেন। অথচ সেই রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার ঠাকুরের জন্মদিনে সরকারি ছুটি দেয় না।” তাঁর চ্যালেঞ্জ, “আগে ধানতলায় ঠাকুরের নামে প্রাথমিক বিদ্যালয় করে দেখান। হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে তার পর আমরা এখানে বক্তব্য রাখছি।”
বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “তৃণমূলের কথা মানুষ আর শুনছে না। তাই এখন ওদের রক্ষাকবচ নিয়ে বেরোতে হচ্ছে।”