শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ফাইল চিত্র।
বিধানসভায় সরকারি নীল-সাদা ইউনিফর্ম এবং জামায় লাগানোর লোগোর সমর্থনে বিশদ ব্যাখ্যা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর বক্তব্য, বিশ্ব বাংলা লোগোর মধ্যে বাংলাকে বিশ্বস্তরে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন এবং বাস্তব মিশে আছে।
বিজেপি শাসিত তিন রাজ্য গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ এবং অসমেও সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের জন্য নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম চালু করা হয়েছে। স্কুলপড়ুয়াদের জন্য বিশ্ব বাংলা লোগো সম্বলিত নীল-সাদা ইউনিফর্ম চালু করার রাজ্য সরকারি সিদ্ধাম্ত নিয়ে বিতর্ক চলছে। বিধানসভায় মঙ্গলবার এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। জবাবে মন্ত্রী বলেন, “এটা কোনও চাপিয়ে দেওয়া বিষয় নয়। বিশ্ব বাংলা লোগো কোনও রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিরও সম্পত্তি নয়। এটা সরকারের প্রতীক। বাংলাকে বিশ্বস্তরে উন্নীত করার লক্ষ্য এর মধ্যে রয়েছে।” পরে সভার বাইরে ব্রাত্য বলেন, “মন্ত্রীর প্যাড থেকে শুরু করে সরকারি যে কোনও অনুষ্ঠানে বিশ্ব বাংলার লোগো ব্যবহার করা হয়। এই লোগো রাজ্যকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে। সব বিষয়ে রাজনীতি না করে এটাকে অন্তত সমর্থন করা উচিত। অহেতুক জলঘোলা করা হচ্ছে।”
ব্রাত্যর আরও ব্যাখ্যা, “এখানে মুখ্যমন্ত্রী, আমাদের দফতর এবং এমএসএমই দফতর সবাই মিলে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। নীল-সাদা রং এক ধরনের শুভর প্রতীক। আর বিশ্ব বাংলার লোগোর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী বলতে চাইছেন, বাংলা কেবলমাত্র একটা স্থানিক আবেগ নয়। এর সঙ্গে একটা আন্তর্জাতিকতাবাদ জড়িয়ে আছে। এই লোগো উপনিবেশবাদের স্মৃতি সরিয়ে বাংলাকে আবার আগের মতো সর্বোচ্চে নিয়ে যেতে চায়। অর্থাৎ, স্বপ্ন এবং বাস্তববাদের মিশেল হচ্ছে এই লোগো।” ব্রাত্য জানান, গুজরাতে ২০২১-এর ৩০ জুন স্কুল ইউনিফর্ম বদলানোর নির্দেশ জারি হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে গত ৬ নভেম্বরের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, স্কুলের নতুন ইউনিফর্ম হবে খয়েরি হাফ প্যান্ট, মেয়েদের ক্ষেত্রে স্কার্ট আর লাল শার্ট। অসমে ২০১৯-এর ৬ মার্চ স্কুলের পোশাক বদলের নির্দেশ জারি হয়েছে। সেখানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ইউনিফর্ম গাঢ় নীল প্যান্ট, মেয়েদের ক্ষেত্রে স্কার্ট আর ছাই রঙের শার্ট। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শার্টের রং সাদা। বিধানসভা অধিবেশনের প্রথমার্ধে রামপুরহাট নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। দ্বিতীয়ার্ধে বিরোধীহীন সভায় শিক্ষা বাজেট পাশ হয়।
নিজ জেলায় নিয়োগে চেষ্টা: মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের নিজেদের জেলায় স্কুলে শিক্ষকতা করার সুযোগ দিতে রাজ্য সরকার চেষ্টা করছে বলে বিধানসভায় জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বিধানসভায় মঙ্গলবার প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি জানান, এক জেলার মানুষ দূরের জেলায় শিক্ষক হিসাবে চাকরি পাওয়ার কয়েক বছর পরেই নিজের জেলায় ফিরতে চান। সেই সমস্যা সমাধানের জন্য রাজ্য সরকার মেধাবীদের নিজেদের জেলায় স্কুলে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ করার চেষ্টা করছে। এই কাজের জন্য একটা পোর্টাল বানানো হবে।