ketugram

তৃণমূলের সভায় মধ্যমণি হয়ে মঞ্চে বিডিও! দিলেন নানা ‘পরামর্শ’ও, বিতর্ক কেতুগ্রামে

যুব তৃণমূল ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ডাকে ২৯ মার্চ ‘শহিদ মিনার চলো’র প্রস্তুতিতে সভা চলছিল। শনিবার সে সভায় দলের নেতাদের মধ্যমণি হয়ে মঞ্চে বসেছিলেন কেতুগ্রাম ১ বিডিও পূর্ণেন্দু সান্যালও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৩ ০৭:০৬
Share:

মঞ্চে বসে বিডিও। নিজস্ব চিত্র

ব্লক অফিস চত্বরে রয়েছে বড়সড় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সভাঘর। যুব তৃণমূল ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ডাকে ২৯ মার্চ ‘শহিদ মিনার চলো’র প্রস্তুতিতে সভা চলছিল সেখানে। শনিবার সে সভায় দলের নেতাদের মধ্যমণি হয়ে মঞ্চে বসেছিলেন কেতুগ্রাম ১ বিডিও পূর্ণেন্দু সান্যালও। প্রস্তুতিসভা নিয়ে তিনি নানা পরামর্শও দেন বলে অভিযোগ। রাজনৈতিক দলের কর্মী-বৈঠকে বিডিও কী ভাবে হাজির, প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। বিডিও পরে দাবি করেছেন, ভুল হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কেতুগ্রাম ১ ব্লক অফিস চত্বরে কয়েক বছর আগে পঞ্চায়েত সমিতির তরফে ওই সভাঘরটি তৈরি করা হয়। স্থানীয় নানা সূত্রের দাবি, এত দিন সেখানে শুধু সরকারি অনুষ্ঠান হত। এই প্রথম কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি দেখা গেল সেখানে। যুব তৃণমূল এবং টিএমসিপি-র তরফে শহিদ মিনারে কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। শনিবার তার প্রস্তুতিতে সেখানে সভা ডাকেন নেতারা। নানা এলাকা থেকে প্রচুর তৃণমূল কর্মী জড়ো হন। মঞ্চের পিছনে বড় ফ্লেক্সে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি টাঙানো ছিল। সভা সফল করার জন্য নানা নির্দেশ, বিজেপি-সহ বিরোধীদের নানা বিষয়ে কী ভাবে কোণঠাসা করতে হবে, সে পরামর্শ দেন নেতারা। অভিযোগ, সে সময়ে কালো টি-র্শাট পরে বসেছিলেন বিডিও। তাঁর পাশেই ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি রাসবিহারী হালদার, কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ, কেতুগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তরুণ মুখ্যোপাধ্যায়েরা।

কেতুগ্রামের সিপিএম নেতা মিনাজুল কবীর ধীরাজের দাবি, ‘‘ওই সভাঘরটি শুধু সরকারি কাজেই ব্যবহার হত। তৃণমূল ব্লক প্রশাসনকে দলীয় কাজে লাগিয়ে ওখানে সভা করেছে। রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বিডিও হাজির হয়ে তৃণমূল কর্মীদের সভা সফল করার জন্য নানা নির্দেশও দিয়েছেন। সরকারি পদে থেকে এই কাজের আমরা চরম নিন্দা করছি।’’ জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতি মিঠুন সরকারের বক্তব্য, ‘‘বিডিও-র উচিত সরাসরি তৃণমূলে যোগ দিয়ে কাজ করা। সরকারি পদে বসে তৃণমূলের তল্পিবাহক হওয়া মোটেই ঠিক নয়। বিডিও-র বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদে নামব।’’ জেলা (কাটোয়া সাংগঠনিক) বিজেপির সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘জনগণের করের টাকায় বিডিও বেতন পান সরকারি কাজ করার জন্য। সেখানে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে তিনি কী করে থাকলেন!’’

Advertisement

মহকুমা প্রশাসন বা তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ঠিক কী হয়েছে, তা আমার জানা নেই। বিশদ খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ মহকুমাশাসক (কাটোয়া) অর্চনা পন্ধরিনাথ ওয়াংখেড়ে বলেন, ‘‘সরকারি কোনও আলোচনাসভায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে থাকতে হয়। ওই দিন কী কর্মসূচি ছিল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

বিডিও-র দাবি, ‘‘তৃণমূল আগে অনুমতি নিয়ে কর্মসূচি করছিল। মঞ্চের পিছনে তৃণমূলের ফ্লেক্স ছিল, তা দেখিনি। দুয়ারে সরকার ও পথশ্রী প্রকল্প নিয়ে প্রধানদের সঙ্গে আমার বৈঠক ছিল। তাই সেখানে হাজির হই। আমারই ভুল হয়েছে।’’ পঞ্চায়েত সমিতির তরফে তৈরি করা সভাঘরটি অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে, এই মর্মে আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি তাঁর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement