এই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে দলের অবস্থান, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট, সংগঠন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং নেতৃত্বের সক্রিয়তা ও নিষ্ক্রিয়তার আবহে বাংলার দলের সাংসদদের নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় বৈঠকে বসছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের দিল্লির বাড়িতে এই বৈঠকটি ডেকেছেন। সেখানে রাজ্যের সব বিজেপি সাংসদকে থাকতে বলা হয়েছে। সাংসদ না হলেও এই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও। বৈঠকে থাকবেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনশল-সহ রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষকরাও। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতেই এই বৈঠক। এই বৈঠকে হাজির থাকবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও। সন্ধে সাড়ে ৭টার মধ্যে সমস্ত সাংসদকে সুভাষ সরকারের বাড়িতে পৌঁছে যেতে বলা হয়েছে। ৮টায় শুরু হতে পারে বৈঠক।
বিজেপি সূত্রে খবর, বাংলার সাংসদদের নিয়ে ইদানীং কালে এত বড় বৈঠক করতে দেখা যায়নি শীর্ষ নেতৃত্বকে। ফলে রাজ্যে দলের এই পরিস্থিতির মধ্যে ধারে ও ভারে এই বৈঠকের গুরুত্ব রয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাংলা সফরের পরেই বাংলার সাংসদ তথা নেতাদের নিয়ে বৈঠক করছে বিজেপি। তবে সেটা আগে থেকেই ঠিক ছিল। গত বৃহস্পতিবারই রাজ্যে এসেছিলেন সন্তোষ। শুক্রবার হুগলির ব্যান্ডেলে বৈঠক করেন রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে। সেই দিন রাতেই বৈঠক করেন শাহ। এর পরে সোমবারের বৈঠক।
গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট থেকে শুরু করে আগামী লোকসভা নির্বাচন — সবই থাকবে এই বৈঠকের আতশকাচের তলায়। পাশাপাশি, এই বৈঠকে নাম ধরে ধরে প্রত্যেক সাংসদের বক্তব্য শোনা হতে পারে। তাঁরা কোনও মতামতও দিতে পারেন। আবার কোথাও কোনও ক্ষোভ থাকলে তা-ও জানাতে পারবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। দলের অনেকের ধারণা, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে নেতা, সাংসদের সক্রিয় দেখতে চাইছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। কারণ, পঞ্চায়েত ভোট থেকেই আগামী লোকসভা নির্বাচনের ভিত তৈরি করতে চাইছেন তাঁরা। উল্লেখ্য, হায়দরাবাদে দলের সম্মেলন থেকে বাংলা, ওড়িশা থেকে গত বারের চেয়ে বেশি আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল বিজেপি। সেই লক্ষ্যেই এই তিন রাজ্যের দায়িত্ব পেয়েছেন বনশল।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজর এড়ায়নি রাজ্য নেতাদের গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয়টি। শীর্ষ স্তর থেকে জেলা স্তরের বিজেপি নেতাদের নানা সময় বিবাদের খবর সামনে এসেছে। সেই সমস্যা দ্রুত মেটানোর জন্য বার্তা আসতে পারে গেরুয়া শিবিরের এই বৈঠক থেকে। অন্য দিকে, পদে থেকেও অনেক নেতা-নেত্রীকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাঁরা যেন তৃণমূল স্তরে ফের সক্রিয় হন, সে বার্তাও দিতে পারেন বিএল সন্তোষরা। আবার সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলে যাঁরা দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন, তাঁদের লাগাম টানার কথাও বলা হতে পারে এই বৈঠকে।
এখন সংসদের অধিবেশন চলছে। ফলে সোমবার দিল্লিতেই থাকার কথা রাজ্য বিজেপির সব সাংসদের। শুধু শুভেন্দুর এখান থেকে বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা। যদিও মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে বৈঠক রয়েছে শাহের। শনিবারই বিরোধী দলনেতা জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁকে ৩০ মিনিট সময় দেবেন।