নিজেদের পুরসভার লোকবলকে এ বার পঞ্চায়েত ভোটে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারবে না রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাতে যদিও থেমে নেই শাসকদল তৃণমূলের পঞ্চায়েত ভোট-প্রস্তুতি। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জেলা স্তরে গিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি হিসাবে জনসভা করছেন। এ বার দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদেরও সে কাজে পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিল দল।
যে সব পুরসভায় এ বছর ভোট নেই, সেখানকার দায়িত্বশীল পদাধিকারীদের পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতে অংশ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরনিগমের মেয়র, পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, ব্লক সভাপতি-সহ দায়িত্বপূর্ণ পদে থাকা তৃণমূলের নেতাদের এ বার থেকে নিয়মিত পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতে অংশ নিতে গ্রামীণ এলাকায় যেতে হবে। সেখানকার নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে রণকৌশল তৈরির পাশাপাশি পঞ্চায়েত এলাকার মানুষদের সঙ্গে কথা বলে সুবিধা-অসুবিধা জানার চেষ্টা করবেন তাঁরা।
গত বছর ডিসেম্বর মাস থেকে ধারাবাহিক ভাবে রাজ্যের শতাধিক পুরসভায় নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। তাই সেই সব এলাকায় ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে আর কোনও ভোট নেই। তাই নিজেদের পুরসভার লোকবলকে এ বার পঞ্চায়েত ভোটে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার নেতাদের এই বার্তা নিচুতলার কর্মীদের কাছে পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে।
অনেক জেলাতেই অনেক নেতা তাঁদের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। আবার আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাকি জেলাগুলিকেও তাদের দায়িত্ব সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও এই কাজ সব থেকে আগে শুরু করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্বয়ং। তিনি কলকাতার মেয়র হওয়ার পাশাপাশি পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীও। তিনিও সপ্তাহে পাঁচ দিন কলকাতায় থেকে নিজের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সপ্তাহের শেষের দুই দিন গ্রামীণ এলাকায় গিয়ে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। সেই কায়দাতেই বিভিন্ন পুরসভা এলাকার নেতাদের পঞ্চায়েত ভোটের কাজে অংশ নিতে বলা হয়েছে। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘আদালতের নির্দেশে হয়তো সাময়িক ভাবে পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির আটকে গিয়েছে। আমাদের আশা আগামী গ্রীষ্মের মরসুমেই পঞ্চায়েত ভোট হবে। তাই আমরা এখন থেকেই নিজেদের কাজে নামতে শুরু করে দিয়েছি। এ ক্ষেত্রে পুরসভা এলাকায় থাকা নিজেদের লোকবলকেও পঞ্চায়েত এলাকায় কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
কলকাতা থেকে যেমন নেতারা জেলা স্তরে গিয়ে কাজ করবেন তেমনই ছোট ছোট পুর এলাকার নেতৃত্বও তাঁদের কাছের পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে কাজ করার সুযোগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে এক দিকে সাংগঠনিক ভাবে যেমন দল সক্রিয় থাকবে, তেমনি পঞ্চায়েত ভোটে লোকবলের সমস্যা অনেকটাই মেটানো যাবে বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কারণ, পঞ্চায়েত নির্বাচন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সেই প্রক্রিয়ায় দক্ষ ভোটকর্মীর প্রয়োজন। তাই পুরসভা এলাকাগুলি থেকে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে এখন থেকেই তাঁদের অংশ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফে।