গৌরভবনে মালদহ জেলার নেতাদের নিয়ে বিজেপি-র বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যে দলীয় নেতা-কর্মীর আরও কড়া অনুশাসনে বাঁধল বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নির্বাচনের আগে মালদহ জেলার বিজেপি নেতা-কর্মীদের যাবতীয় ছুটি বাতিল করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে পুরাতন মালদহে একটি দলীয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার পুরাতন মালদহ এলাকার গৌরভবনে জেলার নেতাদের নিয়ে একটি অভ্যন্তরীণ বৈঠক করেন বিজেপি-র জাতীয় সম্পাদক অরবিন্দ মেনন। বিজেপি সূত্রে খবর, জেলার নেতা-কর্মীদের স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে দলের অনুমতি ছাড়া নিজেদের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকা ছেড়ে যাওয়া চলবে না। মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে হবে নিজেদের এলাকাতেই। শুধু তা-ই নয়, কোনও দলীয় কর্মসূচির সময় সামাজিক বা পারিবারিক উৎসব-অনুষ্ঠানের জন্যও ছুটি নেওয়া যাবে না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে রাজ্যস্তরের নেতৃত্ব, জেলাস্তর থেকে বুথস্তরের নেতৃত্ব— সকলের জন্যই এই একই নিদান দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার উত্তর মালদহের পুরাতন মালদহ এবং হবিবপুরে একাধিক দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন মেনন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু, বিজেপি কিসান মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী এবং জেলা বিজেপি সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডলসহ বহু নেতা।
আরও পড়ুন: হুল দিবসের জন্য উচ্চ মাধ্যমিকের সময়সূচিতে বদল: শিক্ষামন্ত্রী
আরও পড়ুন: মোদীর হাতে বাংলা তুলে দেওয়াটাই তাঁদের আসল লক্ষ্য, বললেন শুভেন্দু
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা নেতাদের স্পষ্ট ভাষায় বার্তা দেওয়া হয়েছে যে বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত দলের কাজকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। কোনও ছুটি পাওয়া যাবে না। বড়দিন বা অন্যান্য উৎসব-অনুষ্ঠানের দিনগুলিতেও দলনির্ধারিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। এমনকি, দলীয় নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়া এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না।
শুক্রবারের বৈঠকে জেলার দলীয় নেতাদের উদ্দেশে মেনন বলেছেন, “বড়দিনের উৎসবে গা না ভাসিয়ে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনের জন্য আমরা দিল্লি-কলকাতা ছেড়ে বিভিন্ন জেলায় থাকছি। আপনাদেরও একই ভাবে নির্ধারিত দায়িত্ব পালনকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বার্তাকে তাঁরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তা ওই বৈঠকে উপস্থিত বিজেপি-র জেলা সহ-সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায়ের কথাতেই স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, “কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বার্তা অত্যন্ত পরিষ্কার। বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সে জন্য প্রয়োজনে ব্যক্তিগত উৎসব-অনুষ্ঠান, কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার থেকে দলের ঠিক করে দেওয়া কর্মসূচিতেই হাজির থাকাটা জরুরি। সবস্তরের সব নেতানেত্রীর জন্যই এই নির্দেশ প্রযোজ্য।”
উত্তর মালদহর সাংসদ খগেন মূর্মূ জানিয়েছেন, জেলার ১২টি বিধানসভার মধ্যে ১০টি বিধানসভা জেতার লক্ষ্য নিয়ে দলের তরফে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তারই রণকৌশল ঠিক করে দিয়েছে। সেই প্রক্রিয়াতে জেলার নেতা-কর্মীদের কাজ করতে বলা হয়েছে। শাসক দলের উস্কানিমূলক কার্যকলাপে গুরুত্ব না দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় জনসমর্থন ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে। জনগণের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকার যে সব প্রকল্প চালু করেছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হঠকারিতায় তার সুবিধা পাচ্ছেন না এ রাজ্যের বাসিন্দারা। এই নিয়ে জোরদার প্রচার অভিযান শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।