জঙ্গলমহলের একটি সমবায় সমিতির নির্বাচনে ৯টি আসনের সব ক’টিতেই হারলেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। ৭টিতে জয়ী হয়ে নিরঙ্কুশ ভাবে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। বাকি দু’টি আসনে জিতেছে সিপিএম। রবিবার পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের চিরুডি পঞ্চায়েতের সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনের এই ফল অস্বস্তিতে ফেলেছে শাসক দলকে।
চিরুডি সমবায়ে নির্বাচন হল এই প্রথম। প্রায় এক দশক আগে তৈরি সমবায়টি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে চলছিল। বিডিও (বান্দোয়ান) মহাদ্যুতি অধিকারী জানিয়েছেন, ওই সমবায়ে ১১টি গ্রামের ২৮২ জন সদস্য রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রবিবার ভোট দিয়েছিলেন ২৬৭ জন। সমবায়ের পরিচালন সমিতির নির্বাচনে ভোট দেন শুধু সদস্যরাই। রাজ্যে পালাবদল হলেও অনেক সমবায়েই তৃণমূল নিজেদের প্রভাব পুরোপুরি বিস্তার করে উঠতে পারেনি। তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সহ-সভাপতি রথীন্দ্রনাথ মাহাতো বলেন, ‘‘অনেক সমবায়ে সিপিএমের আধিপত্য ছিল। এখন সিপিএম থেকে লোকজন বিজেপি-তে চলে যাচ্ছে। এই ফলে সেটাই স্পষ্ট হল।’’
কয়েক মাস আগেই পুরুলিয়ার পুঞ্চার একটি সমবায়ের নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিল তৃণমূল। নিরঙ্কুশ জেতে সিপিএম। মাস দু’য়েক আগে জঙ্গলমহলেরই বাঘমুণ্ডি ব্লকের সুইসা সমবায়ে কংগ্রেস এবং বামেরা এক সঙ্গে ল়ড়ে জয়ী হয়েছিল। তবে, চিরুডি সমবায়ের ভোটে সিপিএম এবং বিজেপি-র আসন সমঝোতা করেছিল বলে দাবি তৃণমূলের। যে আসনগুলিতে বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীরা জিতেছেন, তাতে সিপিএম প্রার্থী দেয়নি। সিপিএমের জেতা আসনে প্রার্থী দেয়নি বিজেপি-ও। রথীন্দ্রনাথবাবুর বক্তব্য, ‘‘এটা কোনও জয়ই না। বিজেপি আর সিপিএমের তলে তলে যে আঁতাঁত রয়েছে, সেটা মানুষ বুঝতে পারলেন। আসলে নৈতিক জয় হয়েছে আমাদেরই।’’
এ কথা মানতে নারাজ বিরোধী দুই দল। বিজেপি-র বান্দোয়ান ব্লক সভাপতি নিমাই সিংহ এবং সিপিএমের স্থানীয় যুব নেতা কমলাকান্ত মণ্ডলের দাবি, সাংগঠনিক শক্তি কম থাকায় বাকি আসনগুলিতে তাঁরা প্রার্থী দিতে পারেননি। তার পরেও জয় এল কোন পথে? বিজেপি-র জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ মাঝি বলেন, ‘‘আসলে তৃণমূলের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে।’’