মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতি বার ধর্নায় বসার ডাক বিজেপি-র। ফাইল চিত্র
সিঙ্গুর। রাজ্যে পালাবদলে বড় ভূমিকা নিয়েছিল সেখানকার জমি আন্দোলন। প্রায় সাড়ে তিন দশকের বাম জমানা শেষ করে রাজ্যে তৃণমূল সরকার গঠনের পটভূমি তৈরি হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ওই জমি আন্দোলন ঘিরে। এ বার সেই সিঙ্গুরেই মমতা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য বিজেপি। শনিবার সে কথা ঘোষণা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১৪, ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর টানা তিন দিন সিঙ্গুরে ধর্নায় বসবে বিজেপি। শুভেন্দু ছাড়াও ওই ধর্নায় বিজেপি-র রাজ্য নেতারা যাবেন। মূল দায়িত্বে থাকবেন বিজেপি-র রাজ্য কৃষক মোর্চা সভাপতি মহাদেব সরকার।
জওয়াদ ঘূর্ণিঝড় ও নিম্নচাপের প্রভাবে রাজ্যে বেশ কিছু জায়গায় চাষের ক্ষতি হলেও সরকার কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই অভিযোগে গত কয়েক দিন ধরেই সরব বিজেপি। শনিবার এ নিয়ে অভিযোগ জানাতে শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিজেপি-র প্রতিনিধি দল যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে। সঙ্গে ছিলেন কৃষক মোর্চার নেতা মহাদেব-সহ আরও অনেকে। রাজ্যাপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে শুভেন্দু জানান, কৃষকদের স্বার্থে রাজ্য সরকার যাতে উদ্যোগ নেয় তার জন্য রাজ্যপালের কাছে তাঁরা দরবার করেছেন। এ ব্যাপারে রাজ্যপাল যাতে সরকারের উপরে চাপ তৈরি করেন সে ব্যাপারেও শনিবার বিজেপি-র প্রতিনিধি দল ধনখড়ের কাছে আর্জি জানায় বলে জানা গিয়েছে।
সিঙ্গুরকে বিজেপি-র গুরুত্ব দেওয়া অবশ্য নতুন কিছু নয়। গত বিধানসভা নির্বাচনে হুগলির এই এলাকায় রাজ্য নেতারা অনেক সময় দিয়েছিলেন। একেবারে শেষ মুহূর্তে তৃণমূলের প্রার্থী হতে না পারা সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে বিজেপি সিঙ্গুরে টিকিট দেয়। যদিও রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্নার কাছে পরাজিত হন রবীন্দ্রনাথ। মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে এখন বিজেপি-র অনেক দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তবে রাজ্য রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ সিঙ্গুর ফের আলোচনার কেন্দ্রে আসতে চলেছে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুকে সিঙ্গুরের ধর্না পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে ধর্না কর্মসূচি শুরু করতে রবিবার ও সোমবারের মধ্যে সিঙ্গুরে গিয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য বিজেপি।