রাজ্যপালকে ঘিরে বিধানসভায় মুহূর্ত। রয়েছেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রমুখ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনেই ধুন্ধুমার বেধেছে। চলতি অধিবেশনের বাকি সময়েও শাসক পক্ষের সঙ্গে সংঘাতে যাওয়ার কৌশল নিচ্ছে বিরোধী দল বিজেপি। পুরভোটে বিপর্যয়ের জেরে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব বড় আকার নিলেও বিধানসভায় তার ছায়া পড়তে দিতে চান না বিজেপির পরিষদীয় নেতৃত্ব।
বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে সোমবার বিধানসভায় ছিল সর্বদল ও কার্য উপদেষ্টা (বি এ) কমিটির বৈঠক। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, বিজেপির কোনও প্রতিনিধি ওই দুই বৈঠকে ছিলেন না। বি এ কমিটিতে আপাতত ১৬ মার্চ পর্যন্ত অধিবেশনের কার্যসূচি ঠিক হয়েছে। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ১৫ তারিখ ফের বি এ কমিটির বৈঠক করে পরবর্তী সূচি ঠিক করা হবে। রাজ্য বাজেট পেশ হবে ১১ মার্চ।
রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বুধ ও বৃহস্পতিবার বিতর্ক চলবে বিধানসভায়। তার আগে আজ, মঙ্গলবার শোকপ্রস্তাব নিয়ে অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যাওয়ার কথা। উৎসবের সময়ে বিধানসভা ডাকা হয়েছে কেন, এই প্রশ্ন তুলে শীতকালীন অধিবেশনে কার্যত অংশগ্রহণ করেননি বিজেপির বিধায়কেরা। কিন্তু বাজেট অধিবেশনে তাঁরা বিধানসভার ভিতরেই সুর চড়াবেন বলে ঠিক হয়েছে এ দিন বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠকে। শাসক দলের বিরুদ্ধে ‘ছাপ্পা ভোটে’ পুরসভা নির্বাচন জয় এবং বিরোধীদের উপরে সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ বিধানসভার অধিবেশনেও তুলতে চান তাঁরা। রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কে প্রথা মেনে মুখ্যমন্ত্রীর আগে বক্তৃতা করার কথা বিরোধী দলনেতার। তার পরে মুখ্যমন্ত্রীর জবাব। বিজেপি সূত্রের খবর, বিরোধী দলনেতার বক্তব্যের সময়ে শাসক শিবির বাধা দিলে মুখ্যমন্ত্রীর জবাবি ভাষণের সময়ে বিরোধী পক্ষও একই পথ নিতে পারে বলে পরিষদীয় দলের আলোচনায় ঠিক হয়েছে।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে এ দিন বিধানসভা থেকে বিজেপি বিধায়কেরা মিছিল করে রাজভবনে যাওয়ার আগে নৌশর আলি কক্ষে পরিষদীয় দলের বৈঠক বসেছিল। বাকি অধিবেশনে তাঁদের কর্মসূচি প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে শুভেন্দু অবশ্য বলেছেন, ‘‘আগামী দিনে কী হবে, আগামী দিনেই দেখা যাবে!’’ আর পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থবাবুর মন্তব্য, ‘‘জনগণের কাছে ওঁরা প্রত্যাখ্যাত। মুখ্যমন্ত্রীর জনপ্রিয়তাকে ওঁরা ভয় পাচ্ছেন। তাই মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন।’’
বিধানসভায় এখনও পর্যন্ত যা সূচি ঠিক হয়েছে, সেই অনুযায়ী, বাজেটের উপরে আলোচনা হওয়ার কথা ১৪ ও ১৫ তারিখ। অতিরিক্ত ব্যয়বরাদ্দের উপরে আলোচনা ও সেই প্রস্তাব পাশ করার দিন রাখা হয়েছে ১৬ তারিখ।