ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।
বেআইনি নির্মাণ, অন্য ধর্মকে আঘাত ও পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদের অভিযোগ তুলে এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পদত্যাগের দাবিতে কলকাতা পুরসভার সামনে শুক্রবার বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। ধর্ম নিয়ে পুরমন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদের সাম্প্রতিক যে মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, ফিরহাদ কী বলেছেন, না জেনে তিনি কিছু বলতে চান না।
দলের উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার উদ্যোগে আয়োজিত ওই বিক্ষোভ কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে বিজেপি পুরসভার সামনে মঞ্চ বাঁধতে চাইলেও পুলিশ অনুমতি দেয়নি। ম্যাটাডরের উপরে মঞ্চ বেঁধে চলে প্রতিবাদ। যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির পুর-প্রতিনিধি সজল ঘোষ, মীনাদেবী পুরোহিত, বিজয় ওঝা, বিজেপির জেলা সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ প্রমুখ। সজলের অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, পাড়ায় হকার বসলে পুর-প্রতিনিধিকে গ্রেফতার করতে হবে। এর প্রতিবাদে পুর-অধিবেশনে নিন্দা প্রস্তাব আনতে চেয়েছিলাম। সরকারের হকার-নীতি নেই। কোথাও বুলডোজ়ার চালানো হল, আর কোথাও হাতজোড় করা হল।” এই নিয়ে ফিরহাদ অবশ্য এ দিন বলেছেন, “হকার-সমস্যা ১০ দিন আগে মিটে গিয়েছে। চূড়ান্ত সমীক্ষাও শেষ। আর এক বার খতিয়ে দেখে তা নবান্নে জমা দেব। বিরোধীদের এত দিনে ঘুম ভেঙেছে।”
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে ফিরহাদ বলেছিলেন, ‘দাওয়াত’ দিয়ে ইসলাম ধর্মে নিয়ে আসতে হবে অন্যদেরও। এই মন্তব্যের প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপি নেতৃত্ব। দলের নেতা তমোঘ্নও এ দিন বলেছেন, “মেয়র কোনও ধর্মের হয় না। মেয়রের বক্তব্যে একটি নির্দিষ্ট ধর্ম ছাড়া অন্য ধর্মের মানুষ আঘাত পেয়েছেন। উনি নৈতিক ভাবে এই পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। ওঁর পদত্যাগ দাবি করছি।” যদিও এ দিন মুম্বইয়ে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের মুখে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ফিরহাদের মন্তব্যের বিষয়ে তিনি জানেন না। না জেনে কিছু বলবেন না। ফিরহাদ তাঁর মত বলে থাকতে পারেন, তবে তাঁরা ‘বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যে’ বিশ্বাস করেন। পাল্টা বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, “যে মন্তব্য নিয়ে জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী তা জানেন না, এটা হতে পারে কি?”