রাজ্য নির্বাচন কমিশনে শুভেন্দু
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে দফায় দফায় বিজেপি-র বিক্ষোভ। পুরভোটে বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হচ্ছে না, প্রার্থীকে হুমকি এবং শাসকদলের নেতা-কর্মীদের শাসানি-সহ নানা অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার কমিশনের দফতরের সামনে দুপুর ২টো থেকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি-র যুব মোর্চার কর্মীরা। যা ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ওই এলাকায়। ঘটনাস্থলে পরে গিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
মনোনয়ন জমা দিতে বাধা এবং পুরভোটের কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে কমিশনের অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দেয় বিজেপি-র যুব মোর্চা। সেই কর্মসূচি চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এখনও পর্যন্ত ৪০-৪৫ জন বিজেপি কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে বিজেপি-র যুব সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ এবং বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবেকে। বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তির সময় এক পুলিশকর্মীও মাথায় আঘাত পান।
গ্রেফতার করা হয় বিজেপি-র উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি কল্যাণ চৌবেকে। নিজস্ব চিত্র
পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার দাবি জানিয়েছি। আমাদের পরামর্শ, বিধাননগরে আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন না করা হলে শান্তিপূর্ণ ভোট সম্ভব নয়। উচ্চ আদালত বলেছে, কোনও ঘটনা ঘটলে কমিশন দায়ী থাকবে। আমি মনে করি, কোনও আইএএস অফিসার এর দায় নেবেন না। প্রত্যেকটা এলাকায় ডিসিআর কাটা রয়েছে। তার পরেও মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি।’’
কিন্তু মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় পেরোনোর পর কেন কমিশনের দফতরে বিক্ষোভ? এই প্রশ্নের জবাবে বিজেপি যুব মোর্চার বক্তব্য, তাঁদের মনে করেছিলেন, অভিযোগ পেয়ে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু তা না হওয়ায় বৃহস্পতিবার কমিশনের দফতরে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের স্পষ্ট বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত মনোনয়নে বাধা দেওয়ার যা যা অভিযোগ জমা পড়েছে, তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হয়েছে।
মঙ্গলবারই ছিল পুরভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। ওই দিন সকাল থেকেই বিজেপি-র অভিযোগ ছিল, প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। বঙ্গ বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘বিজেপি প্রার্থী এবং এজেন্টদের বাড়িতে গিয়ে ভয় দেখানো হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বাইক মিছিলও হয়েছে। পুলিশকেও জানিয়েও লাভ হয়নি। তারা কার্যত নীরব দর্শক থেকেছে।’’ প্রসঙ্গত, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোটের আগেই সাঁইথিয়া, বজবজ, দিনহাটা এবং বোলপুরে পুরবোর্ড কার্যত তৃণমূলের দখলে চলে গিয়েছে।
কমিশনের কাছে শুভেন্দুদের দাবি, সাঁইথিয়া, বজবজ এবং বোলপুরে ভোট বাতিল করতে হবে। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচি নিয়েও কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেক দিন নির্বাচনীবিধি ভঙ্গ করছেন। পাট্টা বিতরণ করা হচ্ছে উত্তরবঙ্গের পুরসভাগুলিতে প্রভাব ফেলার জন্য।’’