অর্ণবকান্তি দাস ও শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র
‘চৌকিদার’ অর্ণবকান্তি দাস রবিবার দুপুর পর্যন্তও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে বিজেপি-র পরিষদীয় দলের সচিব দাবি করে এসেছেন। এ নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইন খোঁজ খবর শুরু করতেই অবশ্য টুইটার ও হোয়াটসঅ্যাপ থেকে দ্রুত উধাও হয়ে গেল সেই পরিচয়।
টুইটারে শুধু বিজেপি পরিষদীয় দলের সচিব পরিচয় দেওয়া থাকলেও, হোয়াটসঅ্যাপে লেখা ছিল, তিনি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও সচিব। রাজ্য বিজেপি-র দাবি, কোনও দিন দলের কোনও দায়িত্বে ছিলেন না অর্ণবকান্তি।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ অর্ণবকান্তির নিয়মিত যাতায়াত ছিল দলের রাজ্য দফতরে। একটা সময়ের পরে তিনি নাকি নিজের থেকেই বিধানসভায় দলের কাজকর্ম দেখতেন। এর জন্য আলাদা কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, অর্ণবকান্তি যে নিজের ভুয়ো পরিচয় দিচ্ছেন তা বিজেপি রাজ্য নেতাদেরও জানা ছিল না। ২০১৬ সাল থেকে বিজেপি-র বিধায়ক, বর্তমানে মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা এই পরিচয়ের কথা শুনে অবাক। আনন্দবাজার অনলাইনকে মনোজ বলেন, ‘‘সত্যিই এমন দাবি করেছেন নাকি! খোঁজ নিচ্ছি। সোমবারই এটা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলব।’’
আনন্দবাজার অনলাইনের ফোন পাওয়ার পরেই টুইটারে বদলে যায় পরিচয়।
বিষয়টি নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেও ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তাঁকে ফোনে পাওয়া না যাওয়ায়, অর্ণবকান্তি যে পরিচয় দাবি করেছেন তাঁর স্ক্রিনশট বিরোধী দলনেতাকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে সত্যতা জানতে চাওয়া হয় আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষে। রবিবার ১টা ১৩ মিনিটে অর্ণবকান্তি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে নিজের যে পরিচয় দিয়েছিলেন তার স্ক্রিনশট নেওয়া হয়। দুপুর ১টা ২২ মিনিটে তা পাঠানো হয় শুভেন্দুকে। ঘটনাচক্রে এর পরে পরেই অর্ণবকান্তির হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে শুধুই ‘বিজেপি’ লেখা। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে দেখা যায়, বিরোধী দলনেতার সচিব তো নয়ই, বিজেপি-র সব ‘পদ’ই মুছে ফেলেছেন তিনি। টুইটারেও বদলে যায় তাঁর পরিচয়। এখন তিনি শুধুই ‘চৌকিদার অর্ণবকান্তি দাস’।
কয়েক মিনিটের ব্যবধানে পরিচয় বদলে যায় হোয়াটসঅ্যাপেও।
এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে ফোন করা হয় অর্ণবকান্তিকেও। কিন্তু প্রশ্ন শুনেই প্রথমে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে অবশ্য নিজেই ফোন করে জানান, “ভুল ধারণার থেকে এটা করেছিলাম। আমার কোনও অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না।” রাজ্য বিজেপি-র এক নেতা বলেন, ‘‘এমনিতে সাধাসিধে মানুষ। অনেক দিনই দলের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু তিনি এমন পরিচয় কেন দিয়েছিলেন সেটা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’