Sukanta Majumdar on West Bengal Government

‘পাঁচ মাসের মধ্যে পড়বে তৃণমূলের সরকার’! কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্যে ইন্ধন দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতিও

রবিবার সল্টলেকে বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন সুকান্ত। তাঁকে শান্তনুর মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সুকান্ত বলেন, ‘‘সরকার তো পাঁচ মাস, ছ’মাস যখন খুশি পড়ে যেতে পারে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৪:০৫
Share:

সুকান্ত মজুমদার। ফাইল ছবি।

বাংলার সরকার পাঁচ-ছ’মাসের মধ্যে পড়ে যাওয়া অসম্ভব নয়— অন্তত তেমনই মনে করেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শনিবারই তাঁর দলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মতুয়া গোষ্ঠীর নেতা শান্তনু ঠাকুর কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরে বলেছিলেন, ‘‘আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, পাঁচ মাসের মধ্যে এই রাজ্যের সরকার পড়ে যাবে।’’ তাই নিয়ে বাংলার রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হতেই বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্তও সেই বিতর্ক উস্কে দিলেন।

Advertisement

রবিবার সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে বিজেপির দফতরে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন সুকান্ত। অফিসের সামনেই তাঁকে শান্তনুর মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে সুকান্ত বলেন, ‘‘সরকার পাঁচ মাস ছ’মাস যখন খুশি পড়ে যেতে পারে। অসুবিধার তো কিছু নেই। সরকার কী ভাবে চলে? বিধায়কদের সমর্থনে। বিধায়কেরা হঠাৎ মনে করল, আমরা সমর্থন করব না। আমরা অন্য কাউকে সমর্থন করব। বিধায়কদের তো মনে হতেই পারে। না হওয়ার তো কিছু নেই।’’ আর কী কী কারণে সরকার পড়ে যেতে পারে, তা ব্যাখ্যা করে সুকান্তের সংযোজন, ‘‘আবার ধরুন, এমন গণ আন্দোলন শুরু হল, যে বিধায়কেরা বলল, ‘আমরা আজ থেকে আর বিধায়ক পদে থাকব না।’ হাত জোড় করে সবাই বিধায়ক পদ ছেড়ে দিল। এরকমও গণআন্দোলন হতে পারে।’’ পাল্টা রাজ্য বিজেপির সভাপতিকে প্রশ্ন করা হয়, তেমন সম্ভাবনা কি আছে? জবাবে সুকান্ত বলেন, ‘‘সব সম্ভাবনাই আছে। রাজনীতিতে কোনও সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না।’’

যদিও শান্তনু বা সুকান্তের এই দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। রবিবার দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এরা তো ক্যালেন্ডার মেনে চলেন। এর আগেও অনেক তারিখ দিয়েছেন। সেই সব তারিখ মেলেনি। এখনও এঁরা তারিখ দিচ্ছেন। সংবাদ মাধ্যমকে এঁরা দিনভর বিস্ফোরক খবর সরবরাহ করে বেড়ান।’’

Advertisement

কুণালের বক্তব্যের লক্ষ্য সম্ভবত রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু গত ডিসেম্বরেই বেশ কয়েকটি তারিখ নির্দিষ্ট করে বলেছিলেন, ওই দিনে এমন কিছু সত্য প্রকাশ্যে আসবে, যাতে সরকারের ভিত নড়ে যেতে পারে। যদিও কার্যক্ষেত্রে তারিখ পেরিয়ে গেলেও তেমন কোনও ঘোষণা শোনা যায়নি শুভেন্দুর তরফে। বিজেপি সূত্রে তখন জানা গিয়েছিল, শুভেন্দুর ওই ঘোষণা নিয়ে দলের ভিতরেই কিছুটা অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল।’’ অন্য দিকে, শান্তনু বক্তব্য নিয়ে জল্পনা শুরু হওয়ার কারণ সাম্প্রতিক অতীতে মহারাষ্ট্র-সহ দেশের কয়েকটি অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যে বিধায়কদের দল বেঁধে শিবির বদল করতে দেখা গিয়েছে। মহারাষ্ট্র টাটকা উদাহরণ। তার আগে মধ্যপ্রদেশেও এই একই ঘটনা ঘটেছিল। স্বাভাবিক ভাবেই বাংলায় বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনুর ওই হুঁশিয়ারি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। সুকান্তও তাতে সুর মেলানোর পর তৃণমূল বলেছে, বিজেপি নেতাদের রাজনীতি নিয়েই কোনও ধ্যানধারণা নেই।

তৃণমূল পরিষদীয় দলের উপ মুখ্যসচেতক তাপস রায় বলেন, “এরা যে কত অরাজনৈতিক, তা এদের এই সব মন্তব্য শুনলেই বোঝা যায়। না আছে এদের কোনও রাজনৈতিক ধ্যানধারণা, না আছে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের জ্ঞান। আর এরা তো বাংলাকেই ভাল ভাবে চিনেই উঠতে পারল না। তাই ওদের এ সব কথার ভিত্তি আছে বলে আমরা মনে করি না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement