জগন্নাথ সরকার।
বিতর্কে জড়ালেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। সৌজন্যে, তাঁর একটি ফোন নম্বর উল্লেখ করে ছড়িয়ে পড়া ‘হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট’ যাতে এক বিবাহিত তরুণীর সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা রয়েছে। সাংসদ অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁকে অপদস্থ করার জন্য নকল ‘চ্যাট’ তৈরি করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং আজ, মঙ্গলবার তিনি সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করবেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার বিকেল থেকে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের কয়েকটি ‘স্ক্রিনশট’ বিভিন্ন মোবাইলে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে জগন্নাথ এবং এক মহিলার আলাদা আলাদা ছবিও রয়েছে। মহিলাকে গোপনে দেখা করতে এবং শিয়ালদহ স্টেশনের দোতলায় ভাড়া করা ঘরে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। মহিলাও বেশ অন্তরঙ্গ ভাবেই কথা বলছেন। বছর চল্লিশের যে মহিলার ছবি ওই চ্যাটে দেখা গিয়েছে, তিনি বিজেপির কোনও পদে নেই, তবে সম্প্রতি কিছু মিছিল-মিটিংয়ে তাঁকে দেখা গিয়েছে। ফুলিয়া বিদ্যামন্দিরের ক্রীড়া শিক্ষক, বছর আটান্নের জগন্নাথও বিবাহিত। সম্ভবত তাঁর স্ত্রীকেই চ্যাটে ‘ম্যাডাম’ বলে উল্লেখ করেছেন মহিলা।
এ প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগরের সাংসদ তথা নদিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া মৈত্রের বক্তব্য, “আমি কারও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চর্চা পছন্দ করি না। কিন্তু কোনও নেতা বা জনপ্রতিনিধির আচরণ বা কার্যকলাপ যদি আপত্তিকর হয় এবং প্রকাশ্যে চলে আসে, তা নিয়ে কথা বলতেই হয়। বিশেষত বংলা ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে নদিয়া জেলার বিশেষ জায়গা আছে এবং জগন্নাথবাবু সেই জেলারই সাংসদ। তাঁর যে আচরণের বিষয়টি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তা দেখে আমি স্তম্ভিত, লজ্জিত। বিজেপি বুঝুক, কারা তাদের নেতা।”
রাতে জগন্নাথ অবশ্য দাবি করেন, “ভুয়ো প্রোফাইল থেকে ভুয়ো ছবি দেখিয়ে আমাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। যে মহিলার ছবি রয়েছে তিনি কে তা-ও আমি জানি না। বিজেপির উত্থানে তৃণমূল ভয় পেয়েছে, তাই এ সব নোংরামো করছে।” ইতিমধ্যে ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে এই সব ‘স্ক্রিনশট’ পোস্ট হয়েছে। জগন্নাথ বলেন, “তৃণমূলের লোকজনই এ সব বেশি পোস্ট করছে। এতেই স্পষ্ট, এটা কাদের চক্রান্ত।” তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তীও। তবে এই দাবি নস্যাৎ করে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায় পাল্টা বলেন, “তৃণমূল এই সমস্ত নোংরামোর মধ্যে থাকে না। উপযুক্ত তদন্ত হোক।”
রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তাই কিছু বলতেও পারব না।” বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রথমে বলেন, “এটা ওঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার, ওঁকেই জিজ্ঞাসা করুন।” দল বিষয়টিকে কী চোখে দেখছে? দিলীপ বলেন, “সমাজ এ সব বিষয়কে যে দৃষ্টিতে দেখে, দলও সেই দৃষ্টিতেই দেখে। দল কথা বলে দেখবে, অভিযোগ সত্য কি না।”