রাজ ভবনে বিজেপির মহিলা প্রতিনিধিদল। — নিজস্ব চিত্র।
চোপড়া-কাণ্ডের আবহের মধ্যেই রাজ্য জুড়ে লাগাতার নারী নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করলেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল-সহ দলের ছয় নেত্রী। তাঁরা কোচবিহারে দলের এক মহিলাকে মারধরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিবিআই তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন। চোপড়া-সহ রাজ্যের নানা জায়গায় নারী নির্যাতন ও গণপিটুনির ঘটনার প্রতিবাদে একই দিনে কলকাতায় বিক্ষোভ মিছিল করল সিপিএমের সংগঠন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি।
নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে চলতি সপ্তাহে বিধানসভায় দু’দিন ধর্না দিয়েছিলেন বিজেপির চার বিধায়ক। তার পরে এ দিন অগ্নিমিত্রার নেতৃত্বে বিধায়ক চন্দনা বাউরি, মালতী রাভা রায়, বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভাপতি ফাল্গুনী পাত্র-সহ ৬ জন রাজভবনে গিয়েছিলেন প্রতিবাদ ও তদন্তের দাবি জানাতে। অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, “রাজ্যে নারীদের উপরে অত্যাচার বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। লাগাতার ঘটছে। রাজ্যপালের কাছে কোচবিহারের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছি এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করার দাবি জানিয়েছি।” বিজেপি নেত্রীদের দাবি, রাজ্যপাল তাঁদের দাবির সঙ্গে সহমত বলে জানিয়ে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে সিপিএমের মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ এবং রাজ্য সভানেত্রী জাহানারা খানের অভিযোগ, মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে সঙ্কট বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে গণপিটুনির আতঙ্ক। শহরে সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে দর্শকাসনের সামনের সারি থেকে যে ভাবে মহিলাদের সরে যেতে বলা হয়েছে এবং উদ্যোক্তারা তা মেনে নিয়েছেন, তারও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। কনীনিকার কথায়, ‘‘এক দিকে মহিলাদের উপরে নির্যাতন বাড়ছে, অন্য দিকে মনুবাদী সংস্কৃতি চলছে!’’
চোপড়া-কাণ্ড নিয়ে পুলিশ-প্রশাসন পদক্ষেপ করেছে জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, “হাথরসের ঘটনার সময়ে ওঁরা (বিজেপি নেত্রী) রাষ্ট্রপতির কাছে যাননি কেন? রাজ্যপাল নিজেই লজ্জায় চোপড়া যেতে পারেননি!” এই প্রেক্ষিতে অগ্নিমিত্রার অবশ্য বক্তব্য, “আমরা মণিপুর, হাথরস, উন্নাওয়ের মতো ঘটনা ঘটলে প্রতিবাদ করি। আর হামিদুল রহমানেরা (চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক) মহিলার চরিত্রের দিকে আঙুল তোলেন। পশ্চিমবঙ্গের মহিলারা এই অত্যাচার মানবেন না।”