ধর্নায় ওঁরা। বিনোদ দাস
করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের নতুন কড়া নির্দেশিকা শুরুর প্রথম দিন শিলিগুড়িতে গ্রেফতার হলেন বিজেপির তিন বিধায়ক।
করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে রবিবার সকালে শিলিগুড়ির রাস্তায় ধর্নায় বসেন বিজেপির তিন বিধায়ক। এ দিন থেকেই নতুন সরকারি নির্দেশিকা চালু হওয়ায় পুলিশ প্রথমে তাঁদের উঠে যেতে বলে। কিন্তু ধর্নায় তাঁরা অনড় থাকায় শেষমেশ ওই তিন বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, শিখা চট্টোপাধ্যায় ও আনন্দময় বর্মণকে গ্রেফতার করা হয়। পরে অবশ্য তাঁরা ছাড়া পেয়ে যান।
এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ হাশমি চকের কাছে বিজেপি কার্যালয়ের সামনে তিন বিধায়ক ধর্নায় বসে পড়েন। তাঁদের সঙ্গে অবশ্য অন্য কোনও নেতা বা কর্মী তেমন ছিলেন না। আশপাশে কয়েকটি ব্যানার ছিল। দু’একজন বিজেপি কর্মীও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। ধর্নায় বসে ওই তিন বিধায়ক অভিযোগ করেন, করোনার চিকিৎসা করাতে মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছেন। অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া, নার্সিংহোমের বিলে দিশেহারা রোগীর পরিবার। অথচ তার পরেও রাজ্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সেই কারণেই এই ধর্না কর্মসূচি। এর কিছুক্ষণ পরই শিলিগুড়ি থানার আইসি গিয়ে বিধায়কদের জানান, নয়া নির্দেশিকায় রাজনৈতিক কোনও কর্মসূচি এখন করা যাবে না। তিনি উঠে যেতে বলেন তাঁদের। শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ জানান, ১০টা বাজলে তাঁরা উঠবেন৷ এর পর সেখানে পৌঁছন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকেরা। তাঁদের কথাতেও কাজ না হওয়ায় গ্রেফতার করা হয় তিন বিধায়ককে। নিয়ে যাওয়া হয় শিলিগুড়ি থানায়। তাঁদের বিরুদ্ধে মহামারি আইনের নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করা হয় বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এর পর বিকেল চারটে নাগাদ তাঁরা ছাড়া পান।
এ দিন শঙ্কর, ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিধায়ক শিখা ও মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় তিনজনেরই বক্তব্য, নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে প্রতিদিনই অভিযোগ উঠছে। চিকিৎসায় অবহেলার কারণে মারা যাচ্ছেন প্রচুর করোনা রোগী। অথচ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীও কোনও কাজ করছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। এ ব্যাপারে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা পুরসভার প্রশাসক গৌতম দেব বলেন, ‘‘শুধু জনপ্রিয়তার জন্য এসব করছেন ওঁরা। সরকারি নির্দেশিকার পর এমন কর্মসূচি করা যায় না, এটা জানা উচিত ওঁদের। এখানে অবস্থান বিক্ষোভ না করে বিজেপি বিধায়কদের উচিত প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া। নরেন্দ্র মোদীকে জিজ্ঞাসা করা উচিত, কেন বাংলায় অক্সিজেন প্ল্যান্ট হচ্ছে না, কেন টিকা বাইরে পাঠানো হচ্ছে। অথচ এঁরা আন্দোলনে নেমেছেন।’’