চাকরি বদলালে দোষ নেই। কিন্তু রাজনৈতিক দলবদলে দোষ কেন? এমনই প্রশ্ন শোনা গেল খড়্গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের মুখে। ফাইল চিত্র
চাকরি বদলালে দোষ নেই। কিন্তু রাজনৈতিক দলবদলে দোষ কেন? তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে যখন বিভিন্ন মহলে নানা জল্পনা তখন এমনই প্রশ্ন শোনা গেল খড়্গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের মুখে। শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে হাজির হয়ে তাঁর সাম্প্রতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্নের মুখে পরেন হিরণ। তিনি কি দলবদলের কথা ভাবছেন? এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এড়িয়ে হিরণ জানান, রংবদল নিয়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। তাঁর বক্তব্য, সাধারণ মানুষও তো নিজেদের মতামত বদলে সরকার বদলান। পেশাজীবী, চাকরিজীবীরাও কাজের জায়গা বদলান। তবে রাজনীতিকদের দোষ কোথায়? একই সঙ্গে তাঁর দাবি, রাজনৈতিক রং নয়, রাজনীতি করতে হবে কোনটা ঠিক ভেবে। প্রান্তিক মানুষদের উন্নয়নের কথা ভেবে।
তবে দলের ভিতরে কি তিনি ঠিক মতো কাজ করতে পারছেন না? সাংগঠনিক বিষয়ে নাক গলানো কি রাজ্য নেতৃত্বের না-পসন্দ? এমন প্রশ্নের উত্তরও সরাসরি দেননি হিরণ। বরং, বিভিন্ন হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, “আমি অনেক গ্রুপে রয়েছি। ওই গ্রুপগুলিতে আমার থাকার দরকার নেই মনে করেই ছেড়েছি। দল বললে আবার ঢুকে যাব।” হিরণ এমন দাবি করলেও রাজনৈতিক মহল জানে মেদিনীপুরের সাংসদ তথা বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর বনিবনা না হওয়াতেই বিদ্রোহী হিরণ। তবে সেটা তিনি মানতে চাননি। বরং, দিলীপের পাশে দাঁড়িয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বের দিকেই অনুযোগের আঙুল তোলেন। হিরণ বলেন, “দিলীপবাবু তো আমাদের সাংসদ। দল বললে উনি কর্মসূচি করবেনই। কিন্তু রাজ্য সভাপতি থেকে নেতৃত্বের সকলকে বলেছিলাম, আমার এলাকায় কোনও কর্মসূচি থাকলে আমায় যেন আগে জানানো হয়।”
সরাসরি স্বীকার করতে না চাইলেও ঠারেঠোরে হিরণ এটা বুঝিয়ে দেন যে বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বের কাছে বারবার জানিয়েও সমাধান সূত্র না পেয়ে তিনি যথেষ্টই ক্ষুব্ধ। শনিবার রাতে ভার্চুয়াল আলোচনায় হিরণ বলেন, “আমি পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে জেতা বিজেপি-র একমাত্র বিধায়ক। আমি বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে কলকাতায়। অথচ আমার অজ্ঞাতেই খড়্গপুর পুরভোটের প্রস্তুতি বৈঠক হয়ে গেলে সেটা তো মেনে নেওয়া যায় না।” রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী বা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে তিনি বার বার নালিশ জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন হিরণ।