টলিউড নিয়ে অকপট হিরণ।
তখনও তিনি বাংলা ছবির নায়ক নন। তখনও তিনি নামী-দামি বাণিজ্যিক সংস্থার প্রথম সারির কর্মী। কর্মসূত্রে মুম্বই দেখেছেন। কাজের কারণে ঘড়ি ধরে ওঠাবসা। আচমকাই নিশ্চিন্ত চাকরি ছেড়ে অভিনয় দুনিয়ায় হিরণ চট্টোপাধ্যায়। ঝাঁপ দিয়েছেন অনিশ্চিত ভবিষ্যতে। কিন্তু আগের পেশাকে একেবারে ছাড়তে পেরেছেন কই? তাঁকে যে সময়ে আসতে বলা হয়েছে তিনি তাঁর দু’ঘন্টা আগে উপস্থিত! এসে কী দেখেছিলেন? মেকআপ ভ্যানই নেই। সহ-অভিনেতারা দূরঅস্ত্। এটাই নাকি টলিউড!
শনিবারের আনন্দবাজার অনলাইনের ‘অ-জানাকথায়’ আড্ডা দিতে এসে টলিউডের আসল ছবি এ ভাবেই ফাঁস করলেন ‘জামাই ৪২০’ ছবির নায়ক। হিরণের কথায়, ‘‘এত দিন পেশাদার দুনিয়ায় কাজ করে অভ্যস্ত। বিনোদন পাড়ার রকমসকম দেখে ঘাবড়েই গিয়েছিলাম। এ দিকে, আমায় সবাই মিলে বোঝাচ্ছেন, ‘‘তুমি আর কর্মী নও। তুমি নায়ক। তোমার জনপ্রিয়তা বাড়াতে হবে তো! এ ভাবে সময়ের আগে চলে এলে তোমায় কে পুঁছবে?’’
নায়ক সেই অভ্যেসে কি অভ্যস্ত হতে পেরেছিলেন? সে কথা পরে। তবে টলি পাড়ায় সকাল সকাল চলে আসার দরুণ তিনি এমনই আরও অনেক ঘটনা নিজের চোখে দেখেছিলেন। যেমন, তিনি এসে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরে সাজগোজের গাড়ি এসেছে। তাকে পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। তার পর বিদ্যুৎ সংযোগ করে তাকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। হিরণ অবশেষে গাড়ির ভিতরে গিয়ে বসতে পেরেছেন। তার দু’ঘণ্টা পরে সহ-অভিনেতাদের দেখা পেয়েছেন!
রূপটান নেওয়ার সময়েও তাঁর জন্য বড় চমক অপেক্ষা করেছিল। নায়ক বলেছেন, ‘‘আমার সহ-অভিনেতাদের রূপটানের পরে তাঁদের পায়ে মোজা পরিয়ে দেন সহকারীরা। তার পর জুতো পরিয়ে ফিতে বেঁধে দিয়ে জানতে চান, ‘‘আর কী করতে হবে দাদা?’’ এটাই নাকি টলিউডের রীতি-রেওয়াজ! হিরণের দাবি, তিনি এটাও করে উঠতে পারেননি কোনও দিন। উলুবেড়িয়ার প্রত্যন্ত গ্রামে অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা বিধায়ক ছেলেটি আজও রূপটান নেওয়ার পরে নিজের মোজা নিজে পরেন। নিজের জুতো নিজে।