—প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল কংগ্রেসের ‘ঘরে’ সিঁধ কাটতে চাইছে বিজেপি!
কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় দুর্গোপুজোর আয়োজনে শাসক তৃণমূলের একচেটিয়া উপস্থিতিতে ভাগ বসাতে এ বার বিশেষ পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। প্রয়াত প্রাক্তন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, মেয়র পারিষদ ও বিধায়ক দেবাশিস কুমার তৃণমূল নেতাদের নামের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে শহরের পুজোর আয়োজন। তুলনায় ছোট আয়োজনের পুজো কমিটিগুলিও নানা ভাবে তৃণমূলের হাতেই। দীর্ঘ দিন ধরে কালী পুজো ও পোস্তার জগদ্ধাত্রী পুজো চলে তৃণমূলের কর্তৃত্বেই। হালে বড় মাপের যে গণেশ পুজোর প্রচলন হয়েছে তাও তাদের নিয়ন্ত্রণেই। এই অবস্থায় আয়োজনে ভাগ বসাতে সক্রিয় হয়েছে বিজেপি। ২০২০ সালে তৎকালীন পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে দুর্গাপুজো শুরু করে রাজ্য বিজেপি। কিন্তু সে পুজো দলীয় বৃত্তের বাইরে পৌঁছয়নি। সম্ভবত এ বছর সেই আয়োজনেও ইতি পড়তে চলেছে। তার বদলে ক্লাবের পুজোয় দলীয় নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মধ্য কলকাতায় বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ ও তাঁর বাবা প্রদীপ ঘোষ আজও পুজোর প্রধান মুখ। ২০২১ সালে এই তাঁদের পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। গত বছর উদ্বোধন করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এ বার উদ্বোধনে আরও ‘ওজনদার’ কাউকে আনার ভাবনা রয়েছে উদ্যোক্তাদের। এ বার অযোধ্যার রাম মন্দিরের আদলের দুর্গা মণ্ডপের উদ্বোধনে কাকে আনা যায়, তা নিয়ে বিজেপিতেও আলোচনা চলছে। সূত্রের খবর,দুর্গা পুজোর আগে অথবা পরে রাজ্যে আসার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তাঁদের চূড়ান্ত সফরসূচি দেখেই শেষ মুহূর্তে এই নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
উত্তর কলকাতার ১৪টি পুজো কমিটির সঙ্গে তাদের কথাবার্তা হয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান নিউমার্কেট থানা এলাকায় খুঁটিপুজোয় উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা রাজ্য সফরে এলে পুজোকে ঘিরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। দলের নেতা-কর্মী, জনপ্রতিনিধিরাও সেখানে উপস্থিত থাকবেন। শহরে অন্তত ২০ টি গণেশ পুজোর সঙ্গে বিজেপি নেতারা যুক্ত রয়েছেন।। তার মধ্যে অন্তত ১৫ টি পুজোয় গেরুয়া- যোগ এ বারই প্রথম। পরিকল্পনা গোপন রাখতে এখন দুর্গাপুজো নিয়ে আলোচনায় রাজি নন বিজেপি নেতারা। দলের উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ বলেন, ‘‘গণেশ পুজো, দুর্গাপুজো, কালীপুজোয় আমাদের কর্মীরা উদ্যোক্তা হিসেবে একাধিক পুজো কমিটিতে থাকবেন।’’ দক্ষিণে এখনও দাঁত ফোটাতে পারেননি বিজেপি নেতৃত্ব। দলের দক্ষিণ কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অনুপম ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্ব বলেছিলেন। কিন্তু এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি। আগামী মাসে সব ঠিক হয়ে যাবে।’’
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলে, ক্লাবগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ থাকলে কাউকে হল ভাড়া করে পুজো করতে যেতে হয়? এখন ভোটের আগে বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু পুজোতে ঢোকার চেষ্টা করছে। তাও সেটা আনুপাতিক হারেই আসে না।’’