—প্রতীকী ছবি।
‘অস্বস্তি’র মুখে পড়ে ‘কড়া’ অবস্থান নিল রাজ্য বিজেপি। এ বার থেকে জেলা সভাপতির অনুমোদন ছাড়া কাউকেই যোগদান করানো যাবে না।
উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত বেলেঘাটার কিছু তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের গত ৩ মার্চ দলে যোগদান করান বিজেপির মণ্ডল নেতৃত্ব। এর পরেই প্রতিক্রিয়া শুরু হয় দলের অন্দরে ও বাইরে। বেলেঘাটার বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার বিধানসভা ভোট-পরবর্তী ‘সন্ত্রাসে’র বলি হয়েছিলেন বলে দলের অভিযোগ। তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ রাজ্যের শীর্ষ নেতারা। রাজ্য বিজেপির সহায়তায় আইনি লড়াইও লড়ছেন প্রয়াত অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকার। তাঁর অভিযোগ, বেলেঘাটা এলাকার যে তৃণমূল কর্মীদের দলে শামিল করা হয়েছে তাঁরা, ভাইয়ের খুনে অভিযুক্ত। ঘটনার প্রতিবাদ করে দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দেন তিনি। এই ঘটনায় সমাজ মাধ্যমে সরব হয়েছিলেন তথাগত রায়, স্বপন দাশগুপ্তের মতো বিজেপির বর্ষীয়ান নেতারা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেমন হাট করে দরজা খোলা হয়েছিল, আবার সেই ঘটনা ঘটলে দলকে ফল ভুগতে হবে। বাধ্য হয়ে পরিস্থিতি সামলাতে আসরে নামেন দলের শীর্ষ নেতারা। বিধায়ক এবং রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল জেলা সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে রবিবার অভিজিতের বাড়িতে যান। সূত্রের খবর, পরিবারের লোকজনের কাছে ‘ভুল’ স্বীকার করে তাঁরা প্রতিশ্রুতি দেন, স্থানীয় নেতৃত্ব উচ্চতর নেতৃত্বকে না জানিয়ে এমন ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তাঁরা ‘ভুল’ শুধরে নেবেন। অভিযুক্তদের কোনও ভাবেই দলে যুক্ত করা হবে না। সেই সঙ্গে নির্দেশ জারি করে বলা হয়, জেলা সভাপতির অনুমোদন ছাড়া কোনও জেলায় কোনও স্তরে কাউকে যোগদান করানো যাবে না।
অগ্নিমিত্রার বক্তব্য, “আমাদের দলে অনেক বড় নেতা থাকতে পারেন। কিন্তু যাঁরা মার খেয়ে, আক্রান্ত হয়ে, পরিবার-পরিজন হারিয়ে দল করছে, তাঁরাই দলের সম্পদ। তাই তাঁদের আপত্তি থাকলে কিংবা এই আক্রমণের ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে শুধু দল বাড়াতে হবে— এই যুক্তিতে কাউকে দলে যুক্ত করা হবে না।” তিনি জানান, বিশ্বজিৎ এই আশ্বাস পেয়ে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিয়েছেন।