নির্বাচন কমিশনে বিজেপির প্রতিনিধিরা। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
রাজ্যের শাসক দলের উপর চাপ আরও বাড়াতে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবিতে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল বিজেপি। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বিপর্যস্ত--এই অভিযোগ তুলে সোমবার রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে দাবিপত্র তুলে দিয়েছে একটি প্রতিনিধি দল। ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, শিশির বাজোরিয়ারা। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার দাবিও জানিয়ে এসেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই তুলছে বিজেপি। গত বছর লোকসভা ভোটের পর থেকে তাঁদের দলের কর্মীদের খুন করছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা— এমন অভিযোগ অহরহ করে আসছে গেরুয়া শিবির। শাসক দলের হয়ে কাজ করছে বলে দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপি নেতাদের নিশানায় রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনও। রাজ্যে বিধানসভা ভোটের হাওয়া গরম হতেই সেই দাবি আরও জোরাল হয়। এই পরিস্থিতিতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবি অনেক দিন ধরেই করে আসছিলেন দলের নেতারা। এ বার সরকারি ভাবে কমিশনে সেই নালিশ ঠুকে এল বিজেপি।
গত বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে ডায়মন্ড হারবারে একটি দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে হামলার মুখে পড়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়। অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাকে হাতিয়ার করে বিজেপির দাবি, ওই দিন শাসক দলের প্রত্যক্ষ মদতে হামলা হয়েছে কনভয়ে। আর সন্ধের দিকে পুলিশ দায়সারা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, কনভয়ে থাকা নেতাদের কেউ চোট পাননি। সবাই নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছেছেন।
আরও পড়ুন: ঘোষণা নেই, তবে ‘বহিরাগত’ এবং ‘দলতন্ত্র’ নিয়ে তীব্র কটাক্ষ শুভেন্দুর
গোটা ঘটনার বিবরণ এবং পুলিশের এই বয়ান তুলে ধরে পদ্ম শিবিরের দাবিপত্রে অভিযোগ, ‘এই পুলিশ-প্রশাসন থাকলে সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। তাই শুধু ভোটগ্রহণের সময় নয়, নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক’। দলের নেতাদেরর আশঙ্কা, কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকলে পুলিশের সাহায্য নিয়ে তৃণমূল তাঁদের প্রচার করতে দেবে না এবং বহু জায়গায় অশান্তির সৃষ্টি হতে পারে।
আরও পড়ুন: ববির বৈঠকে জিতেন্দ্রর না, কথা চান শুধু মমতার সঙ্গে
দাবিপত্রের সঙ্গে একটি ভিডিয়ো ক্লিপ জমা দিয়েছে বিজেপি। তাদের দাবি, ওই ভিডিয়োতে নবান্নে রাজ্য সরকারি কর্মী ফেডারেশনের একটি বৈঠকে সংগঠনের নেতারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী করবেন বলে আশ্বস্ত করছেন। এ ছাড়া ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রেও এই ফেডারেশনের কর্মীরা পক্ষপাতিত্ব করবেন বলে কমিশনে অভিযোগ করা হয়েছে। এই সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ভোটার তালিকা সংশোধন থেকে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত কোনও কাজেই ব্যবহার করা যাবে না বলেও কমিশনকে দেওয়া দাবিপত্রে উল্লেখ করেছে বিজেপি।