ফাইল চিত্র।
কলকাতায় বর্ষার জমা জল ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন শুভেন্দু অধিকারী। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোলা ‘ম্যান মেড’ বন্যার অভিযোগ খণ্ডন করার চেষ্টা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। পাশাপাশি, বন্যার দায় একতরফা ভাবে কেন্দ্রের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টারও বিরোধিতা করেছেন।
বুধবার হাওড়ায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে মমতা কেন্দ্র এবং ডিভিসি-র উপর বন্যার দায় চাপিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এ বারে বৃষ্টি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু, প্রকৃতির রোষে এই বন্যা হয়নি। আচমকা ডিভিসি যে ভাবে জল ছেড়ে দিয়েছে তাতেই বন্যা হয়েছে।’’ মোদীকে লেখা চিঠিতে শুভেন্দুর দাবি, ‘ডিভিসি পুরোপুরি কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থা নয়। আন্তঃরাজ্য সংস্থা। সেখানে কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং ঝাড়খণ্ড সরকারের এক তৃতীয়াংশ করে অংশীদারিত্ব রয়েছে’।
বুধবার হাওড়া সফরের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপে ডিভিসি-র বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতিকে ‘ম্যান মেড’ বলেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়ে সমস্ত বিষয় উল্লেখ করে সুরাহাও চান তিনি। চিঠিতে তিনি জানান, ডিভিসি-র ইচ্ছে মতো জল ছাড়ার কারণেই ২০১৫, ২০১৭, ২০১৯ সালের পর আবার এই বছর রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা ‘পাল্টা চিঠিতে’ শুভেন্দুর দাবি, ডিভিসি-র পরিচালন পর্ষদের সদস্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের প্রিন্সিপাল সচিব পর্যায়ের কোনও আধিকারিক থাকেন বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু। বর্তমানে ডিভিসি পরিচালন পর্ষদের সদস্য হিসেবে রাজ্য সরকারের সেচ ও জলপথ দফতরের সচিবের পাশাপাশি রয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরের মুখ্য নির্বাহী বাস্তুকারও। বৃহস্পতিবার শুভেন্দু বলেন, ‘‘ডিভিসি-র জল ছাড়া নিয়ে যে অভিযোগ রাজ্যের তরফেতোলা হয়েছে তা অসত্য। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ডিভিসি-র নামে যেটা বলছেন সেটা অসত্য। আমি কয়েক মাস সেচমন্ত্রী ছিলাম। ডিভিসি-র স্টেকহোল্ডার তো রাজ্য সরকারও।’’
শুভেন্দুর দাবি, সংশ্লিষ্ট দুই রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় ডিভিসি পরিচালন পর্ষদ। এ বিষয়ে রাজ্যগুলিকে প্রয়োজনীয় সতর্কবার্তাও পাঠানো হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন বার্তা পাওয়ার পরেও সতর্ক হয়নি, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। যদিও তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় শুভেন্দুর অভিযোগ খারিজ করে বলেছেন, ‘‘এই বন্যা পরিস্থিতির জন্য কে দায়ী, তা সকলেই জানেন।’’