ফাইল ছবি
পুজোর পর স্কুলের দরজা খুলে যেতে পারে রাজ্যে। তবে পড়ুয়াদের যেতে হতে পারে এক দিন অম্তর এক দিন। বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন, তার নির্যাস এমনই। ইতিমধ্যেই শিক্ষক এবং শিক্ষাবিদরা মমতার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। চিকিৎসকরাও মনে করছেন, স্কুল খোলার বিষয়টি এ বার গুরুত্ব দিয়ে ভাবার সময় এসেছে। পরিকল্পনামাফিক স্কুল খোলার পক্ষে তাঁরা। শিক্ষক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মীদের টিকা দিয়েই স্কুল খোলা যেতে পারে বলে মত তাঁদেরও।
দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পড়ুয়াদের স্কুলে যাওয়া। বন্ধ ঘরে মোবাইলে ই-লার্নিং এখন পড়ুয়াদের নতুন ক্লাসরুম। চিকিৎসকদের মতে এতে ছোটদের চোখ এবং মনের সমস্যা বাড়ছে। আগেই নয়াদিল্লির এমস প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া ধীরে ধীরে স্কুল খোলার বিষয়ে ভাবা যেতে পারে বলে জানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকেও সে রকম ইঙ্গিত মিলেছে। রাজ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় গঠিত দলের সদস্য চিকিৎসক যোগীরাজ রায় মমতার এই ঘোষণাকে স্বাগত জানান। তাঁর মতে, ‘‘সাহস করে স্কুল খুলতে হবে। কোভিডের জন্য একটা প্রজন্ম স্কুল শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিতে হবে পরিকল্পনামাফিক। সংক্রমণ বাড়লে স্কুল বন্ধ করার জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তৈরি রাখতে হবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও।’’
ভেলোরের খ্রিস্টান মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন ভাইরোলজিস্ট চিকিৎসক জেকব জনের মতে, বাড়ির বড়দের এবং স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের করোনার টিকা দেওয়া থাকলে শিশুদের টিকাকরণ ছাড়াও স্কুল খোলা যেতেই পারে। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে স্কুল খোলার আগে স্মার্ট পরিকল্পনা করার পক্ষপাতি তিনি।
বড়রা কোভিড বিধি মানলে সংক্রমণ কমায় সাহায্য করবে বলে মনে করেন চিকিৎসক কুণাল সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘এক দিকে, তেড়েফুঁড়ে টিকাকরণ কর্মসূচি চালাতে হবে। অন্য দিকে, এলাকাভিত্তিক করোনা পরিস্থিতি দেখে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’
যদিও শিশু চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষের মতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার মধ্যে স্কুল খুললে চিন্তা বাড়বে। পরিস্থিতি আরও ভাল হলে স্কুল খোলার পক্ষে তিনি।
তবে বেশির ভাগ চিকিৎসকের পরামর্শ—
• প্রথম দু’সপ্তাহ স্কুল খুলে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা
• পরিস্থিতি ঠিক থাকলে সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারে
• স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, ক্যান্টিন থেকে বাসচালক— সকলকেই টিকাকরণের আওতায় আনা
• স্কুলে দূরত্ব বিধি মানার জন্য প্রতি দিন সব পড়ুয়াকে ক্লাসে না আনা
• এ ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের একাধিক দলে ভাগ করে এবং স্কুলের সময় ভাগ করে ক্লাস চালু করা যেতে পারে