Suvendu Adhikari

বিজেপির বৈঠকে তৃণমূলের গুণগান শুভেন্দুর মুখে, শুনলেন রাজ্যের পাশাপাশি দিল্লির পাঠানো নেতারাও

কী ভাবে শূন্য থেকে শীর্ষে পৌঁছেছে তৃণমূল, তারই ব্যাখ্যা শোনা গিয়েছে নন্দীগ্রামের বিধায়কের মুখ থেকে। দুর্গাপুরে চলা বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে উপস্থিত নেতারা জানাচ্ছেন, শুধু তৃণমূল নয়, সিপিএমের বিভিন্ন আন্দোলন দেখেও গেরুয়া শিবিরের শেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:৫৯
Share:

দুর্গাপুরে বসেছে বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত।

তখন তিনি তৃণমূল। নন্দীগ্রাম পর্বে দলীয় আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতও জড়িয়ে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এখন তিনি বিজেপি। দলের বৈঠকে সেই সব দিনের কথা তুলে ধরলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কী ভাবে শূন্য থেকে শীর্ষে পৌঁছেছে তৃণমূল, তারই ব্যাখ্যা শোনা গিয়েছে নন্দীগ্রামের বিধায়কের মুখ থেকে। দুর্গাপুরে চলা বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে উপস্থিত নেতারা জানাচ্ছেন, শুধু তৃণমূল নয়, সিপিএমের বিভিন্ন আন্দোলন দেখেও গেরুয়া শিবিরের শেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু।

Advertisement

শুক্রবার দুর্গাপুরে দু’দিনের রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠক বসেছে বিজেপির। প্রথম দিন ছিল রাজ্য পদাধিকারীদের বৈঠক। সেখানেই পরিষদীয় নেতা হিসাবে আমন্ত্রিত ছিলেন শুভেন্দু। শনিবার কর্মসমিতির সব সদস্য এবং জেলা সভাপতিদের নিয়ে বসেছে দ্বিতীয় দিনের আলোচনা। এই বৈঠক থেকেই আগামী তিন মাসের জন্য রাজনৈতিক প্রস্তাব নেবে রাজ্য বিজেপি। সেই রাজনৈতিক প্রস্তাবে কী কী বিষয় থাকতে পারে, আগামী কয়েক মাস দল কোন ধরনের আন্দোলন করবে, এ নিয়ে আলোচনাই ছিল শুক্রবারের বৈঠকের মূল বিষয়। সেখানেই দলকে রাজ্যে কোন পথে এগোতে হবে, তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শুভেন্দু বাংলায় বাম ও তৃণমূলের বিরোধী দল থাকার সময়ের কথা উল্লেখ করেন বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

শুক্রবার ছিল রাজ্য পদাধিকারীদের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত।

রাজ্যের পদাধিকারীরা ছাড়াও শুক্রবারের বৈঠকে দিল্লি থেকে পাঠানো এই রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতা উপস্থিত ছিলেন। সুনীল বনশল, মঙ্গল পাণ্ডে, অমিত মালবীয় এবং আশা লাকড়া ছিলেন বৈঠকে। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও ছিলেন। সকলেই দলের আগামী কর্মসূচি কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে বলেন। বেশির ভাগ নেতাই লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে সংগঠনকে মজবুত করার জন্য কী কী করা উচিত, তা নিয়ে মতামত দেন। রাজ্য, জেলা থেকে বুথ স্তরে নিয়মিত বৈঠকের প্রস্তাবও আসে। বিজেপি সূত্রে খবর, সেই সবের মধ্যেই শুভেন্দু মত প্রকাশ করেন। তিনি জানান, এখন যা পরিস্থিতি তাতে দলকে বেশি করে রাস্তায় নামতে হবে। আন্দোলনের মধ্যে না থাকলে সংগঠনকে মজবুত করা যাবে না।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিজেপি ‘নবান্ন অভিযান’ কর্মসূচি নিয়েছিল। তা সফল হয়েছিল বলেও দাবি করে গেরুয়া শিবির। কিন্তু এর পর থেকে বিজেপিকে আর সে ভাবে আন্দোলনের পথে দেখা যায়নি। দলের সিদ্ধান্ত ছিল, ঘন ঘন বড় মাপের আন্দোলন না করে বুথ স্তরে সংগঠন মজবুত করার দিকে নজর দিতে হবে। গত এক মাস ধরে বিজেপি জেলা ধরে ধরে অঞ্চল সম্মেলন করে চলেছে। বুথ কমিটি গড়ার কাজও চলছে। শুভেন্দু কি তবে শুধু সে সব না করে লাগাতার আন্দোলনের পথ চাইছেন? এমন প্রশ্ন উঠেছে শুক্রবারের বৈঠকের পরে। সেখানে উপস্থিত এক রাজ্য নেতা বলেন, ‘‘শুভেন্দুদা সরাসরি বৈঠক, সম্মেলন না করার কথা বলেননি। তিনি শুধু বেশি করে রাস্তায় নামার কথা বলেছেন। তৃণমূলের দুর্নীতি এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্পের রূপায়ণে আর্থিক অনিয়মকে হাতিয়ার করে রাস্তায় নামাতেই যে তাঁর বেশি আগ্রহ, সেটা বুঝিয়েছেন।’’ ওই নেতার আরও দাবি, শুধু তৃণমূল নয়, বামেরাও কী ভাবে একের পর এক আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল সে উদাহরণও দিয়েছেন শুভেন্দু। তবে বেশি জোর ছিল নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামকে ঘিরে চলা তৃণমূলের আন্দোলনের কথায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement