(বাঁ দিকে) শুভেন্দু অধিকারী, হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যের মুখ্য সচিবকে শো-কজ় করা হোক, সঙ্গে তাঁর অবসরকালীন সমস্ত সুযোগ-সুবিধাও কাটছাঁট করার দাবি জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার বিধানসভার প্রেস কর্নারে এক সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই নন্দীগ্রাম বিধায়ক জানান, রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের ডিওপিডি সচিব, ক্যাবিনেট সচিব এবং অর্থ সচিবকে চিঠি পাঠিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব। সেখানেই তিনি কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী মন্তব্য করেছেন। রাজ্য সরকারের আর্থিক ঋণের তুলনা টানতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন। যা নিয়ম-বহির্ভূত। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, কেন্দ্রীয় ক্যাডারের আধিকারিক হয়েও তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বিষয় নিয়ে সমালোচনা করেছেন। যা কেন্দ্রীয় সরকারের একজন আধিকারিকের পক্ষে সম্ভব নয়।
সাংবাদিক বৈঠকের একটি ক্লিপ দেখান শুভেন্দু। যেখানে মুখ্যসচিবকে একটি মন্তব্য করতে শোনা যাচ্ছে। যেখানে তিনি রাজ্য সরকারের ঋণের পরিমাণের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের ঋণের পরিমাণের কথা উল্লেখ করছেন। সেই ভিডিয়ো ক্লিপ জোগাড়ের পাশাপাশি তার ইংরেজি অনুবাদ করেছে বিরোধী দলনেতার দফতর। তাঁর পাঠানো চিঠির সঙ্গে সঙ্গে ওই ভিডিয়ো ক্লিপ এবং তার ইংরেজি অনুবাদ পাঠানো হচ্ছে। শুভেন্দু বলেন, ‘‘একজন আধিকারিক যিনি কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া এক্সটেনশন পেয়ে কাজ করছেন, সেই আধিকারিক কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ। তিনি নিজের কর্মজীবনের যাবতীয় শর্ত উল্লঙ্ঘন করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধী মন্তব্য করেছেন। যা নিয়ম-বহির্ভূত।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমি তিনটি মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়ে মুখ্যসচিবকে শো-কজ়ের দাবি জানিয়েছি, সঙ্গে অবসরের পর তাঁর সমস্ত সুযোগ-সুবিধা যাতে কাটছাঁট করা হয়, তা-ও জানিয়েছি।’’
প্রসঙ্গত, গত জুন মাসের ৩০ তারিখে কর্মজীবনের মেয়াদ শেষ হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিবের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি ফোন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন জানানোয় তাতে সায় দেয় কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে ৬ মাসের কর্মজীবন বৃদ্ধি হয়েছে মুখ্যসচিবের। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের মুখ্যসচিব পদে বহাল থাকবেন তিনি। আর তার মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেন শুভেন্দু। প্রসঙ্গত, এর আগে প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সংঘাত হয়েছে রাজ্যের।