BJP

নন্দীগ্রামে কৃষকের বাড়িতে দুপুরে আহার শুভেন্দুর

যে কৃষকের বাড়িতে শুভেন্দু দুপুরের আহার সারেন সেই চিত্তরঞ্জন দাস এলাকায় বামকর্মী হিসেবে পরিচিত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৫৪
Share:

বিরুলিয়ার কৃষকের বাড়িতে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এক মাস কেটেছে। ইতিমধ্যেই দলের হয়ে একাধিক জনসভাও করেছেন। সবেতেই তাঁকে দেখা গিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ঢঙে নিজের বক্তব্য রাখতে। মুখে উঠে এসেছে হিন্দি ভাষা। এ বার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পথে হেঁটেই জনসংযোগ সারতে কৃষকের বাড়িতে খেলেন বিজেপি নেতা শুভেম্দু অধিকারী।

মঙ্গলবার কৃষি বিলের সমর্থনে নন্দীগ্রামের শিবরামপুর থেকে বিরুলিয়া পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার পদযাত্রা তিনি। ঘোলপুকুরে একটি জনসভার আয়োজন করা হয় বিজেপির তরফে। মূল বক্তা ছিলেন শুভেন্দুই। জনসভার পরে বিরুলিয়ার এক কৃষকের বাড়িতে গিয়ে দুপুরের আহার সারেন বিজেপি নেতা। এদিনের সভায় বাম-কর্মীদের বিজেপিতে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। শুভেন্দু বলেন, ‘‘যাঁরা এখনও ঝান্ডা ধরে বাম দল করছেন তাঁদের উচিত বিজেপিতে আসা।’’ কারণ হিসেবে তুলে ধরেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি, কলেজের ছাত্র সংসদ, পুরসভায় ভোট হওয়ার যুক্তি। মুখ্যমন্ত্রীর নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এ দিন ফের শুভেন্দু বলেন, ‘‘উনি বলেছেন নন্দীগ্রামের প্রার্থী হবেন। ভবানীপুর বড়বোন, নন্দীগ্রাম মেজ বোন কিছুদিন পরে ডোমজুড় সেজ আর বালি ছোট বোন হবে! ভোট এলেই নন্দীগ্রামের কথা মনে পড়ে? ২০১৬র বিধানসভা নির্বাচনের আগে ২০১৫-তে এসেছিলেন। ফের এখন ভোটের আগে এসেছেন।’’ আমপান, আবাস যোজনা সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়েও তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শুভেন্দু।

Advertisement

তবে এদিন যে কৃষকের বাড়িতে তিনি দুপুরের আহার সারেন সেই চিত্তরঞ্জন দাস এলাকায় বামকর্মী হিসেবে পরিচিত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অন্য রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী কোনও মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে তাঁকে নিজের দলে টানা বিজেপির পুরনো পদ্ধতি। শুভেন্দুও সেই পথ অনুসরণ করছেন। চিত্তরঞ্জের ছেলে দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘২০১৮ সালে মোদিজীর কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে বাম দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। আমরা যা প্রতিদিন খাই আজ শুভেন্দুবাবুও তাই খেয়েছেন।

এ দিনের পদযাত্রায় ছিলেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক, সহ-সভাপতি প্রলয় পাল, মণ্ডল সভাপতি অরূপ জানা, নন্দীগ্রামে বিজেপির কনভেনার বটকৃষ্ণ দাস প্রমুখ।

Advertisement

যদিও শুভেন্দুর এমন আচরণকে নাটক বলে মন্তব্য করেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রের কৃষি বিল নন্দীগ্রামের কৃষকরা মানেননি। তৃণমূলে থাকতে কখনও উনি কৃষকের বাড়িতে খাননি। আজ নাটক করতে কৃষকের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করছেন। আমপানের টাকা উনি ওঁর পেটোয়া লোকজনদের দিয়ে চুরি করেছেন। শুভেন্দু বড় চোর, সেটা নন্দীগ্রামের মানুষ জানে।’’

নন্দীগ্রামের পর এ দিন ভগবানপুর-১ ব্লকের দ্বারিমারার সভা থেকে ফের তৃণমূলের দুর্নীতি তুলে ধরে সরব হন শুভেন্দু। বলেন, ‘‘ভগবানপুরে ভেড়ি কান্ডে নিহত তৃণমূল নেতা নান্টু প্রধানকে চেনেন তো। নান্টু কী করতো জানেন তো। বস্তায় করে টাকা নিয়ে কলকাতায় পৌঁছে দিত। প্রাইমারিতে ফাঁকা খাতা নান্টুবাবুরা খাতা ফিলাপ করতো। এই সব ছেলেদের ছেলেদের অসৎ করলো কারা?’’ এদিন ভগবানপুরের বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তিনি। বলেন, ‘‘নোটবন্দির পরে ১৫ কোটি কালো টাকা মুগবেড়িয়া কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে বদল করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, অর্ধেন্দু মাইতি এই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান।’’ যদিও এই বিষয়ে অর্ধেন্দুর দাবি, ‘‘এটা সম্পূর্ণ অসত্য। এর কী তথ্য প্রমাণ উনি দেন দেখবো। অসত্য বলায় ওঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement