সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার কাছে সাহায্যের দাবি শুভেন্দু অধিকারীর। ফাইল চিত্র।
তাঁর নিজের উপরেও অনেক মামলার চাপ। রাজ্যের বাকি নেতারাও বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে রয়েছেন। ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক সংঘর্ষের মামলায় জড়িয়েছেন জেলা স্তরের নেতা থেকে বুথকর্মীরাও। সে সব মামলা লড়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাহায্য দরকার। বিজেপি সূত্রে খবর, দিল্লিতে দলের এ রাজ্যের সাংসদদের বৈঠকে হাজির হয়ে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার কাছে এমনটাই দাবি জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ওই বৈঠকে হাজির একাধিক নেতা সে কথা জানালেও শুভেন্দু আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি।
সংসদে অধিবেশন চলায় এখন বাংলার বিজেপি সাংসদেরা সকলেই দিল্লিতে রয়েছেন। সোমবার রাতে তাঁদের সকলকে নিয়েই বৈঠকে বসেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেখানে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষের থাকার কথা থাকলেও তিনি আসেননি বলেই জানা গিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের বাড়িতে হওয়া ওই বৈঠকে অনেক দিন পরে রাজ্যের সব সাংসদ একসঙ্গে হাজির ছিলেন। বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে বৈঠকে যোগ দেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুও। সেখানে রাজ্যের সাংসদেরা যেমন নানা বিষয়ে কথা বলেন, তেমন শুভেন্দুও সুযোগ পান। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যাঁরা, তাঁদের সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের বক্তব্যের গোড়াতেই রাজ্য বিজেপির মামলা লড়া সম্পর্কিত সমস্যার কথা তুলে ধরেন তিনি। একইসঙ্গে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কী ভাবে সাহায্য করতে পারেন তা ভাবার জন্য অনুরোধ করেন। নড্ডা কোনও স্পষ্ট উত্তর না দিলেও বিষয়টি নিয়ে তিনি অবগত এবং তা বিবেচনাধীন বলেই জানিয়েছেন।
বৈঠকে হাজির ছিলেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারাও। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনশল ছাড়াও ছিলেন এই রাজ্যের পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে এবং দুই সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয় এবং আশা লাকড়া। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার পঞ্চায়েত ভোটের জন্য কেমন প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে সে বিষয়ে জানান। কী কী সমস্যার মুখে দলকে পড়তে হচ্ছে, তা নিয়ে কথা বলেন দিলীপ ঘোষ-সহ অন্য সাংসদেরাও। বাংলার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও সবিস্তার আলোচনা হয়। রাজ্য এবং জেলা স্তরে অনেকেই যে বিক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছেন সে প্রসঙ্গও ওঠে।
বৈঠকের শেষে এক সাংসদ জানান, সকলের কথাই মন দিয়ে শুনেছেন নড্ডা। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠকে রাজ্য বিজেপিকে বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। পঞ্চায়েত ভোটে সাফল্য না এলে যে আগামী লোকসভা নির্বাচনেও রাজ্যে বিজেপি সুবিধা করতে পারবে না, সে কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। একইসঙ্গে সব বিরোধ মিটিয়ে সকলকে নিয়ে কাজ করার পরামর্শও দেন। যেখানে যত বিক্ষুব্ধ নেতা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা এবং ক্ষোভের কারণ জানারও পরামর্শ তিনি দিয়েছেন সুকান্তদের। একইসঙ্গে বলেছেন, পরিষদীয় দল তথা বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে কাজ করতে হবে। নিয়মিত ভাবে বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক এবং সাংসদদের একসঙ্গে বসার উপরেও জোর দিয়েছেন নড্ডা।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বৈঠক শেষে সাংসদদের জন্য নৈশভোজেরও আয়োজন ছিল। তবে সেখানে থাকতে পারেননি নড্ডা। রাতেই অন্য একটি বৈঠক থাকায় তিনি সুভাষের বাড়ির নৈশভোজ শুরুর আগেই চলে যান।