(বাঁ দিকে) শুভেন্দু অধিকারী এবং (ডান দিকে) কুণাল ঘোষ। — ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের আবহে এ বার নতুন দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা-১ ব্লকের দুবদায় শুভেন্দু জানান, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছাড়ার মুখে তাঁকে শেষ মুহূর্তে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার প্রস্তাব দিয়েছিল রাজ্যের শাসকদল। তবে তিনি সেই প্রস্তাবেও তৃণমূল ছাড়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি। তৃণমূল যদিও পাল্টা জানিয়েছে, শুভেন্দু সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারির ভয়ে বিজেপিতে গিয়েছেন।
বুধবার ভোটের প্রচারে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক দাবি করেন, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দলবদলের আগে শেষ মুহূর্তে তাঁকে ধরে রাখতে মরিয়া ছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। তিনি বলেন, ‘‘আমি ওই সময় পাঁচটা দফতরের মন্ত্রী ছিলাম। সঙ্গে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ, এইচআরবিসি। সব ফেলে চলে এসেছিলাম। ছুড়ে ফেলে চলে এসেছিলাম। লাস্ট ১ ডিসেম্বর ২০২০ উপমুখ্যমন্ত্রীর অফার দিয়েছিল। সেটাও ছুড়ে ফেলে দিয়ে এসেছি।’’ শুভেন্দুর দাবি, “পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচাতে হবে, রাজ্যবাসীকে বাঁচাতে হবে। এই উদ্দেশ্যেই আমি সমস্ত অফার ছুড়ে ফেলে দিয়ে এসেছিলাম।’’
যদিও শুভেন্দুর ওই দাবি নস্যাৎ করেছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘শুভেন্দু এত কথা বলছেন, সিবিআইয়ের এফআইআরের কথাটা বললেন না। আসলে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারির ভয়ে গিয়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। সেটা বলুন। এ সব কাল্পনিক কথা বলে কী লাভ। নন্দীগ্রাম-সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুর এবং গোটা রাজ্যে হার নিশ্চিত জেনে প্রাসঙ্গিক থাকার চেষ্টা করছেন শুভেন্দু।” পাশাপাশি, শুভেন্দুর দাবিকে কটাক্ষ করে কুণালের মন্তব্য, ‘‘উনি নিজেই উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ চেয়েছিলেন। সোজা ‘না’ বলে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের দলের এক নেতাকে উনি (শুভেন্দু) উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছার কথা বলেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে নাকচ করে দেওয়া হয়।”
প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক প্রাক্কালে ২০২০ সালের ১৭ই ডিসেম্বর বিধানসভায় গিয়ে তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবং তার দু’দিন বাদে ১৯ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দলনেতা। তার আগে ওই বছরের ২৭ নভেম্বর তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তবে সেই সময় তাঁর সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল, সেই বিষয়ে কোনও দিনই সে ভাবে মুখ খুলতে দেখা যায়নি শুভেন্দুকে। এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তিনি দাবি করলেন, রাজ্যের শাসক দল তাঁকে ধরে রাখতে মরিয়া ছিল। তবে সেই সুযোগ তিনি ‘হেলায় ছেড়ে দিয়েছেন’ বলেই দাবি রাজ্য বিজেপির অন্যতম মুখ শুভেন্দুর।