বৃহস্পতিবার বিজেপির কর্মসূচিতে শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ওঠা সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে রাজ্য মন্ত্রিসভায় ২৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল বলে বৃহস্পতিবার অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার বিজেপির সব ক’টি মোর্চা নেতৃত্বকে নিয়ে হওয়া সাংগঠনিক বৈঠকে একটি কাগজ দেখিয়ে শুভেন্দু জানান, তাঁর কাছে রাজ্য মন্ত্রিসভা বৈঠকের নোট রয়েছে। সেখানেই ২৬২ কোটি টাকা বরাদ্দের উল্লেখ রয়েছে। সেই টাকা দিয়ে এসএসসি ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীদেরও যাতে নিয়োগ করা যায় সেই লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে শুভেন্দু দাবি করেন, অবৈধ নিয়োগকে আইনি করার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তিনি এ নিয়ে আদালতে যাবেন বলেও জানিয়েছেন। তৃণমূল অবশ্য এমন দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। দল যে সবার চাকরির পক্ষে সেটাই উল্লেখ করেন তৃণমূল মুখপাত্র তাপস রায়।
বৃহস্পতিবার বিজেপি দলের ৭টি মোর্চার রাজ্য নেতৃত্বকে নিয়ে একটি সাংগঠনিক সভা করে বিধাননগরে পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্র (ইজ়েডসিসি)-এর প্রেক্ষাগৃহে। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়েই শুভেন্দু দাবি করেন, গত ৫ মে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেই নোট তাঁর কাছে রয়েছে। একটি কাগজ হাতে নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রিসভার নোট আমি দেখাচ্ছি। ২০২২ সালের ৫ মে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সেই বৈঠক হয়েছিল। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী ২৬২ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছিলেন। যাতে অবৈধ ভাবে নিয়োগ হওয়া সকলের নিয়োগ বজায় রেখে ওয়েটিংয়ের সবাইকে চাকরি দিয়ে বিষয়টার নিষ্পত্তি করা যায়।’’মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিলেও তা বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় হতে দেননি বলেও দাবি করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘মন্ত্রিসভার এই নোট আগের রাজ্যপাল তথা বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় আটকে দিয়ে গিয়েছিলেন। এই নোট বলছে, ৫৮ হাজার নিয়োগের ৫০ হাজার বিক্রি হয়েছে আর ৮ হাজার নেতাদের ছেলেমেয়ে, আত্মীয়স্বজন পেয়েছেন।’’ এই বিষয়টি নিয়ে তিনি আদালতে মামলা করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
শুভেন্দুর এই দাবি নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘আমরা তো যাতে সবার চাকরি হয় সেটাই চাই। তা ছাড়া এমন একটা অভিযোগ শোনার পরে নথি না দেখে কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’’ আর তৃণমূল মুখপাত্র তাপস বলেন, ‘‘এটা দুর্ভাগ্য যে ও আজকে বিরোধী নেতা। ও কখন যে কী বলে ও নিজেও জানেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজও বলেছেন যে, তিনি এবং সরকার চায় সকলের চাকরি হোক। আমরা এঁদের বিষয়ে সহমর্মী।’’