এ বার জনস্বার্থ মামলায় নবান্নের বিরুদ্ধেই সিবিআই তদন্তের দাবি উঠল। ফাইল চিত্র।
প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার হিসাব দিতে পারছে না বলে অভিযোগ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। ক্যাগের রিপোর্টকে ভিত্তি করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হল। বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ৩১ মার্চ ক্যাগের রিপোর্টে ওই অসঙ্গতির কথা রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের আবেদনও জানানো হয়েছে। হাই কোর্টে হওয়া জনস্বার্থ মামলায় অভিযোগকারীদের মধ্যে রয়েছেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। তবে তিনি মামলা করেছেন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে। এ ছাড়াও মামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী সুমনশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী ঋত্বিক পাল।
গত বৃহস্পতিবার মামলাটি দায়ের হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ৩১ মার্চে কেন্দ্রীয় সংস্থা ক্যাগ (কম্পট্রোলার এবং অডিট জেনারেল)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের পাঠানো কোটি কোটি টাকার হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। প্রচুর টাকার আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
আদালতে যে হিসাব পেশ করা হয়েছে তাতে দাবি, গত কয়েকটি অর্থবর্ষে বিভিন্ন প্রকল্প বাবদ কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে যে টাকা রাজ্য সরকার পেয়েছে তার মধ্যে ২ লাখ ২৯ হাজার ৯৯ কোটি টাকার হিসাব জমা দেওয়া হয়নি। হিসাব না দেওয়ার টাকার মধ্যে পুরসভা এবং নগরোন্নয়ন দফতরের ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি রয়েছে। পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে কেন্দ্রে দেওয়া অর্থের মধ্যে ৮১ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকার হিসাব দেওয়া হয়নি। এই সব টাকা কোন খাতে কী ভাবে খরচ করা হয়েছে তার হিসাব রাজ্য সরকার দেয়নি বলে ক্যাগ রিপোর্টে রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে মামলাকারীদের তরফে। দাবি, শিক্ষা ক্ষেত্রে হিসাব না দেওয়া অর্থের পরিমাণ ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।
এক খাতের টাকা অন্য খাতে খরচের অভিযোগ নিয়ে আগেই সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ বার একই রকম দাবি নিয়ে মামলা গেল হাই কোর্টে।
জনস্বার্থ মামলায় ক্যাগের রিপোর্টের ভিত্তিতে হাই কোর্টে সিবিআই তদন্তের আবেদন জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, জনগণের স্বার্থে পাঠানো টাকা লুট করা হয়েছে। এফআইআর দায়ের করে সিবিআই বা কোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে এর তদন্তের নির্দেশ দিক প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
এর আগে বিভিন্ন বিষয়ে সিবিআই চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলকে। তবে এ বার জনস্বার্থ মামলায় নবান্নের বিরুদ্ধেই সিবিআই তদন্তের দাবি উঠল। মামলায় যুক্ত করা হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিব, পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব, শিক্ষা দফতর ও পুরসভা এবং নগরোন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিব এবং সিবিআইকে।