আমপান ক্ষতিপূরণে শাসকদলের ‘দুর্নীতি’র প্রতিবাদে জয়পুরে সভা বিজেপির। উপস্থিত দিলীপ ঘোষ। ছবি: সুব্রত জানা
আমপানে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে অন্তত দু’মাস আগে। সেই ক্ষতিপূরণে দুর্নীতির অভিযোগে ঝড়-বিধ্বস্ত ব্লকগুলিতে সোমবার প্রতিবাদ সভা করল বিজেপি।
হাওড়ার আমতা-২ ব্লকের জয়পুরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সেই প্রতিবাদ-সভাকে ঘিরে শাসকদলের সঙ্গে রাজনৈতিক চাপান-উতোরও চলল।
দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমপানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা ক্ষতিপূরণ পাননি। সেই টাকা মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের পুজোর বোনাস হিসেবে পাইয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমপানের পরেই রাজ্যে পরিদর্শনে এসে ১০০০ কোটি টাকা সাহায্য দিয়েছিলেন। সেই টাকাও রাজ্য সরকার হজম করে ফেলেছে। ত্রাণের কাজে লাগানো হয়নি।’’
দিলীপবাবুর এই মন্তব্যের সমালোচনা করেন জেলা (গ্রামীণ) তৃণমূল সভাপতি পুলক রায়। তিনি বলেন, ‘‘আমপানের পরে রাজ্য সরকার তিন দফায় ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা কেউ যাতে বঞ্চিত না হন, সে জন্যই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তিন দফায় ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরি হয়। দিলীপবাবুদের সত্যিই যদি দরদ থাকত, তা হলে দফায় দফায় তালিকা প্রকাশের পরই তাঁরা অভিযোগ জানাতে পারতেন।’’
গত ২০ মে আমপানের ঠিক পরেই ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। বেশি উঠছিল শাসকদলের অন্দরেই। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশমতো ব্লক প্রশাসনগুলি দ্বিতীয় দফায় তালিকা তৈরির কাজ শুরু করে। সে কথা মনে করিয়ে পুলকবাবু বলেন, ‘‘আমাদের দলের তরফ থেকেই বরং বিভিন্ন স্তর থেকে কিছু অভিযোগ আসে। প্রতিটি অভিযোগের তদন্ত হয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। বিজেপির তখন টিকি দেখতে পাওয়া যায়নি। বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। তাই তামাদি হয়ে যাওয়া একটি বিষয়কে নিয়ে দিলীপবাবুরা বাজার গরম করতে নেমেছেন।’’ ওই তৃণণূল নেতার দাবি, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সফরের পরে কেন্দ্র ১০০০ কোটি টাকা দিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু সেটা সিন্ধুতে বিন্দুর মতো। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে রাজ্য সরকার নিজেই ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণের কাজে খরচ করেছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।’’
প্রতিবাদ-সভায় দিলীপবাবু বিধানসভা নির্বাচন কেন্দ্রীয় বাহিনীর অধীনে হবে বলেও ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের দিনে বুথের ১০০ গজের মধ্যে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের দেখতে পেলে বাহিনী পিটিয়ে ছাতু করে দেবে।’’ সভা শেষে বিজেপির একদল প্রতিনিধি বিডিও-র কাছে আমপান দূর্নীতির তদন্ত চেয়ে স্মারকলিপি দেন। হুগলির পান্ডুয়াতেও বিজেপির পক্ষ থেকে একই দাবিতে বিডিওকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।