Dilip Ghosh

তৃণমূলের দখলেই যাচ্ছে কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতি, মেদিনীপুরে এসে মেনে নিলেন দিলীপ

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির ২৫টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে জিতেও বিজেপি বোর্ড গঠন করতে পারে নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২১ ১৬:০৩
Share:

মেদিনীপুরে সাংবাদিক বৈঠকে দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।

ভোট পরবর্তী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের পাশে দাঁড়াতে মেদিনীপুর গেলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরে জেলা বিজেপি পার্টি অফিসে জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিজেপি সভাপতি সৌমেন তিওয়ারি-সহ অন্য নেতার হাজির ছিলেন ওই বৈঠকে।

Advertisement

বৈঠকের পর তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি দিলীপ মঙ্গলবার কার্যত মেনে নিয়েছেন, কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির দখল করতে চলছে তৃণমূলই। তাঁরই লোকসভা কেন্দ্র মেদিনীপুর অন্তর্গত ওই পঞ্চায়েত সমিতির কয়েকজন সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন ইতিমধ্যেই।

সাংবাদিক বৈঠকে দিলীপ অভিযোগ করেন, ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে বিজেপি সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর থেকে শুরু করে, মারধর এমনকি জরিমানা করা হচ্ছে। আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে এবং জেলার নেতাদের ‘করণীয়’ সম্পর্কে অবহিত করতেই তিনি মেদিনীপুরে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভোট পরবর্তী হিংসা অব্যাহত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় দলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা যাচ্ছেন খোঁজ খবর নিচ্ছেন। যেহেতু আমি এই এলাকারই সাংসদ, তাই খোঁজ নিতে এসেছি। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। জেলার নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে ঘর চাড়াদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে।’’

Advertisement

বিজেপি-র অভিযোগ, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে পশ্চিম মেদিনীরপুর জেলায় এক হাজারের বেশি বিজেপি নেতা-কর্মী- সমর্থক ঘরছাড়া। তাছাড়া কয়েকশ বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। জরিমানা করা হচ্ছে। এখনও মারধর, ভয় দেখানো চলছে। মুচলেকা লেখানো হচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে জেলা নেতাদের সেই সব অসহায় পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিধানসভা ভোটে কিছু আসনে পুনর্গণনার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী পূর্নগণনা করানোর দাবি জানানো হয়। তবে আদালতেও জানানো যেতে পারে। প্রয়োজন হলে যাওয়া হবে। তবে জেলায় আমাদের ভোট কমেছে। কেন কমল তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’’

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির ২৫টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে জিতেছিল বিজেপি। ১২টিতে তৃণমূল। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও বিজেপি বোর্ড গঠন করতে পারে নি। বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া ভেস্তে যাওয়ায় বিজেপি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও ঝুলে ছিল বোর্ড গঠনের কাজ। বিধানসভা ভোটের পর বিজেপি-র একাধিক সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ফলে বোর্ড গঠন করা এখন তৃণমূলের সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতি বিজেপি-র গঠন করার কথা ছিল। আদালতের নির্দেশ মান্য হয়নি। এখন বোর্ড গঠন করবে তৃণমূল। এটা নতুন কিছু নয়। ওখানকার মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে বিজেপি-কে জিতিয়েছিল। এখন গণতন্ত্রের অপমান করা হচ্ছে।’’ অন্যদিকে, জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি মঙ্গলবার বলেন, ‘‘কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড দ্রুত গঠন করা হবে। তার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তা ছাড়া বিজেপি যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ করছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যে। পুলিশ-প্রশাসন বিষয়টি দেখছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement