বিয়ের আসরে অরবিন্দ মেনন।
বাংলার মাটিতে ফুল ফোটাতে এসেছিলেন। পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সহকারী হয়ে এসেছিলেন অরবিন্দ মেনন। বিজেপি-র সর্বভারতীয় সম্পাদক মেনন বাংলার দায়িত্বে আসেন ২০১৮ সালের অক্টোবরে। পরের বছর ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ১৮ আসনে জয় পেলেও আসল লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি মেনন। বাকিদের মতো অমিত শাহর সৈনিক হিসেবে পরিচিত অরবিন্দেরও দায়িত্ব ছিল নবান্ন দখলনিশ্চিত করা। কিন্তু রথের চাকা অনেকটা দূরেই আটকে যায়। পদ্ম ফুল ফোটেনি বাংলায়। কিন্তু তার পরে পরেই বিয়ের ফুল ফুটল মেননের। শুক্রবার কেরলের এক মন্দিরে একেবারে ঘরোয়া ভাবেবিয়ে সারলেন মেনন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, মেননের বয়স এখন ৫৫-র আশপাশে।
কৈলাস বা পরবর্তী সময়ে সহ-পর্যবেক্ষক হিসেবে বাংলায় আসা অমিত মালব্য বিধানসভা ভোট পর্বে যতটা প্রকাশ্যে এবং প্রচারে এসেছেন ততটা নন মেনন। গেরুয়া শিবিরের সকলেই জানেন কিছুটা আড়ালে থেকে চুপচাপ কাজ করাই পছন্দ মেননের। বিয়েটাও সারলেন কার্যত চুপচাপ। দিন কয়েক আগে বাগদান পর্বের খবর জানা গিয়েছিল। শুক্রবার বিয়েও হয়ে গেল। কিন্তু বাংলার কোনও নেতাই আমন্ত্রিত নন। বিয়ের যে ছবি সামনে এসেছে তাতে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতাদের কাউকেও দেখা যায়নি। জানা গিয়েছে, কেরলের গুরুবায়ুর মন্দিরে বিয়ে হয়েছে মেননের। শুক্রবার নিজের সংসার জীবনে প্রবেশের কথা টুইটেও জানিয়েছেন মেনন। সকলের আশীর্বাদ চাওয়ার পাশাপাশি অনুষ্ঠানের কিছু ছবিও দিয়েছেন।
বিয়ের আমন্ত্রণ কারও কাছে না এলেও মেননের গুণগ্রাহীর সংখ্যা কম নয় রাজ্য বিজেপি-তে। তাঁদেরই একজন বলেন, ‘‘কেরলের মানুষ হলেও ঝরঝরে বাংলা বলতে পারেন মেনন। এই রাজ্যের দায়িত্ব পেতে পারেন জানার পরেই নাকি সেটা শিখে নিয়েছিলেন। এ ছাড়াও মালায়লি, ভোজপুরি, হিন্দি, ইংরেজি ভাষাতেও সমান দক্ষ তিনি। আরএসএস থেকে রাজনীতিতে এসে খুব কম দিনেই অমিত শাহর কাছের লোক হয়ে যান অরবিন্দ মেননজি।’’ বাংলার আগে বিহার, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাতেও পর্যবেক্ষক থেকেছেন। ২০০৮ ও ২০১৬ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনেও তাঁর উপরে সাংগঠনিক দায়িত্ব ছিল। সবটাই করেছেন বিজেপি-র সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে। আরএসএস-এর ক্ষেত্রে না হলেও বিজেপি-তে অবশ্য সর্বক্ষণের নেতাকর্মীদের সংসার পাতায় কোনও বাধা নেই।
দলের ব্যবস্থাতেই কলকাতাতেও একটা ঠিকানা রয়েছে মেননের। রাজ্য নেতারা আশায় আছেন, কলকাতায় এলে একটা ভোজের ব্যবস্থা নিশ্চয়ই হবে। সেই সঙ্গে দলের আরও এক সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলানো নেতার বিয়ে নিয়েও ধূমধাম হতে পারে বলে গেরুয়া শিবিরে গুঞ্জন। নাম, পরিচয় সামনে না আনলেও বিজেপি শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনিও সদ্যই বাংলা থেকে অন্য রাজ্যের দায়িত্বে গিয়েছেন। আর তাতেই গুঞ্জন, বঙ্গে পদ্ম ফুল না ফুটলেও, দলের কারও কারও বিয়ের ফুল ফুটছে।